স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক ছাত্রীর স্কুল ড্রেসের জামার ফুলহাতার অর্ধেকটা কেটে দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর স্ত্রী ও ঢাকার ফুলার রোডে অবস্থিত উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহবুবা খানম কল্পনা। বুধবার ক্লাস চলাকালে এ ঘটনার সময় কাঁচিতে হাতে আঘাত লাগার অভিযোগ করেন অনেকে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন জানান, আমাদের আগে কখনো নোটিশ দেয়া হয়নি। ক্লাসে কখনো বলাও হয়নি। আমরা হিজাব পরিধান করি। কিন্তু এর সাথে শর্ট হাতা পরলে সবাই খারাপ ভাববে। তাই ফুলহাতা পরে আসি। নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ফুলহাতা শার্ট পরে এসেছে- এমন অভিযোগ তুলে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহবুবা খানম কল্পনা কাঁচি দিয়ে ছেলেদের সামনেই মেয়েদের জামার হাতা কেটে দেন। কিন্তু ম্যাডামরা আমাদের কোনো ধরনের সুযোগ না দিয়ে সবার সামনে হাতা কেটে দিলেন। এ সময় অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ড. উম্মে সালেমা বেগম বলেন, আমার নির্দেশে তাদের জামার হাতা কেটে দেয়া হয়েছে। এর আগে আমি তাদের অনেকবার নিষেধ করেছি ফুলহাতা পরে আসতে। কিন্তু এরপরও তারা একই কর্মকান্ড করেছে। তাই স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল কাঁচি দিয়ে ফুলহাতা কেটে দিয়েছেন। তিনি বলেন, স্কুলের নিয়ম অনুসারে সবাইকে ড্রেস পরে স্কুলে আসতে হবে। এর বাইরে মেনে নেয়া হবে না। তবে কেউ যদি পর্দার কারণে ফুলহাতা শার্ট ও হিজাব পরে আসতে চায় তবে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
এর প্রতিবাদে অভিভাবকদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগে কোনো ধরনের নোটিশ বা নির্দেশনা না দিয়ে এ কাজ করেছে। মুসলিম দেশে মেয়েরা ফুল হাতার পোশাক পরিধান করতেই পারে। যদি এটি তাদের পছন্দ না হয় তাহলে জিন্সের প্যান্ট এবং গেঞ্জি পরার নিয়ম করুক। এ রকম স্বেচ্ছাচারি সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় কারণে হিজাব বা ফুলহাতা পরে আসতেই পারে। বাংলাদেশে এ ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ নয়। তিনি মন্ত্রীর স্ত্রী বলে যা ইচ্ছা তাই করবেন- এটা হতে পারে না। এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্তের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা স্কুলের প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের পদত্যাগ দাবি করছি।
এ ঘটনার পর থেকেই প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের শাস্তির দাবিতে অভিভাবকরা স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন। স্কুলের গভর্নিং বডি যদি তাদেরকে অপসারণ না করে, তাহলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানান অভিভাবকরা।
Leave a Reply