l
বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১০:০১ পূর্বাহ্ন
দুনিয়া জুড়ে ডেস্ক: চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিএনএ পরীক্ষা নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলে তোলপাড়।অপরাধ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডিএনএ পরীক্ষা এখন আস্থার জায়গা তৈরি করে নিয়েছে।
তবে মূলত ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টও এনেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। এ পদ্ধতির উদ্ভাবক যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্যার অ্যালেক জন জেফ্রিজ।
অ্যালেকের জন্ম ১৯৫০ সালের ৯ জানুয়ারি। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অ্যালেক। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানমনস্ক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। বাবাও ছিলেন বিজ্ঞানের মানুষ। অনেকটা এ কারণেই ছোটবেলা থেকেই অ্যালেকের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল। এ বিষয়টি তার বাবাও লক্ষ্য করেন। তিনি ছেলের জন্য একটি ‘কেমিস্ট্রি সেট’ নিয়ে ঘরে আসেন।
অ্যালেকের বিশ্ব যেন কেমিস্ট্রির বিভিন্ন উপাদান নির্ভর হয়ে উঠলো। সে ছোট ছোট এক্সপ্লোশন ঘটাতো। মা এতে রাগ হলেও বাবা হাসতেন আর বলতেন সাব্বাশ। আট কি নয় বছর বয়সে বাবা একদিন ঘরে নিয়ে আসলেন মাইক্রোস্কোপ। তখন অ্যালেককে আর পায় কে। কেমিস্ট্রি থেকে তখন নতুন আগ্রহ জন্মায় বায়োলজিতে। বয়সের সঙ্গে সবসময় তিনি আধুনিক ছিলেন। যখন যা প্রয়োজন বাবা সেটাই তার সামনে হাজির করতেন। ছেলে নষ্ট হবে এ বিষয়টি ভেবে কোনো কিছু থেকে দূরে রাখার কোনো চেষ্টায় করেনি।
অ্যালেকের বাবা মনে করতেন, ছেলেকে বেড়ে উঠতে হবে নিজের মনের মতো করে। নিজস্ব মোটরবাইক চালিয়ে তিনি স্কুলে যেতেন। সৌখিন অ্যালেক সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় দেখে বিস্মিত হতো তার বন্ধুরাও। স্টাইলিশ অ্যালেক অক্সফোর্ডের মেরটোন কলেজ থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে ১৯৭২ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ভালো ফলাফলের পর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করার সুযোগ পান। সেখান থেকেই পিএইচডি শেষ করেন। ১৯৭৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব লেইসিসটারে তিনি গবেষণার কাজ শুরু করেন।
এ গবেষণার কাজটি করতে গিয়েই ১৯৮৪ সালে প্রতিটি মানুষের নিজস্ব ডিএনএ বের করার পদ্ধতি বের করে ফেলেন।একইসঙ্গে জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্টেরও পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ঘটে যায় বিপ্লব।
ঘটনাটির কথা বলতে গিয়ে অ্যালেক বলেন, ১৯৮৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সকাল নয়টায় আমি বের করে ফেলি প্রতিটি মানুষের ডিএনএ বিভিন্নরকম। সেটা বের করা সম্ভব। তখন উত্তেজনায় আমি আরও একটি কাজে মনোযোগ দিয়ে ফেলি। কারণ তখন হুট করেই মাথায় আসে যদি এটি বের করার পদ্ধতি ব্যবহারযোগ্য হয় তাহলে লন্ডনের পুলিশের জন্য অপরাধ দমন করা অনেক সহজ হয়ে পড়বে। ঠিক তখনই ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে কাজ শুরু করে দিই। বিজ্ঞানের এ উদ্ভাবনকে বিশ্বব্যাপী গ্রহণ করা শুরু হয়। রাতারাতি সেলিব্রেটিতে পরিণত হন অ্যালেক। তার এ উদ্ভাবনের জন্য দ্বিতীয় রাণী এলিজাবেথ ১৯৯৪ সালে অ্যালেককে ‘নাইট’ উপাধী দিয়ে সম্মান জানান।