শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশটির রাসায়নিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দেওয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন, এ জন্য এক বছর সময় লাগবে এবং ১০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে। প্রভাবশালী মার্কিন টিভি চ্যানেল ফক্স নিউজকে গত বুধবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাশার এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ তদন্ত দলের সিরিয়া সফরের পর প্রকাশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়, দামেস্কর অদূরে রাসায়নিক হামলায় সারিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এই হামলার জন্য প্রতিবেদনে কাউকে দায়ী করা হয়নি। প্রতিবেদন প্রকাশের আগে থেকেই ওই হামলার জন্য বাশারবাহিনীকে দায়ী করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে রাশিয়া এর বিরোধিতা করে।
বাশার এমন সময় এ কথা বললেন, যখন কিনা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রুশ-মার্কিন মতৈক্যে তৈরি হওয়া জেনেভা রূপরেখা অনুযায়ী একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরির কাজ করছে। ওই রূপরেখায় আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সব রাসায়নিক অস্ত্র হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে সিরিয়াকে। সাক্ষাৎকারে বাশার দাবি করেন, সিরিয়ায় কোনো গৃহযুদ্ধ হচ্ছে না; বরং সিরিয়ার জনগণ বিদেশিদের সমর্থন পাওয়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদার জঙ্গিদের শিকার হচ্ছে।
বাশার বলেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনী নয়, রাজধানী দামেস্কর অদূরে গত ২১ আগস্টের রাসায়নিক হামলার জন্য বিদ্রোহীরাই দায়ী। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র প্রসঙ্গে বাশার বলেন, আমি মনে করি, রাসায়নিক অস্ত্র হস্তান্তর প্রযুক্তিগতভাবে জটিল কাজ। এ জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। প্রায় ১০০ কোটি ডলার লাগতে পারে। তিনি আরও বলেন, এটা নির্ভর করছে বিশেষজ্ঞদের ওপর… এর একটি সময়সূচি আছে। এ কাজে এক বছর বা তার চেয়ে কিছু বেশি সময় প্রয়োজন হতে পারে।
বাশার বলেন, তিনি ‘আগামীকালই’ রাসায়নিক অস্ত্রের একটি তালিকা হস্তান্তর করতে পারেন। সিরিয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ প্রস্তাবের খসড়া তৈরিতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যরাষ্ট্র—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া ও ফ্রান্স কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া রাজি থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ওই প্রস্তাবের ওপর ভোট হতে পারে। হামলার পথ খোলা রাখতে হবে: পাশ্চাত্যের সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব অ্যান্ডার্স রাসমুসেন গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, সিরিয়া-সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে কাজ করতে হলে দেশটিতে হামলা বা এ ধরনের অভিযানের পথ অবশ্যই খোলা রাখতে হবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি ইউরোপের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাসমুসেন এ কথা বলেন।
সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার জন্য বিদ্রোহীরা দায়ী—বাশার সরকারের এমন অভিযোগ নাকচ করে দেন তিনি। সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মস্কোর তোলা অভিযোগের জবাব দিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্বসংস্থাটির মুখপাত্র মার্টিন নেসার্কি বলেন, প্রতিবেদনে যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা বিতর্কের ঊর্ধ্বে। সিরিয়ায় যা ঘটেছে, সে বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন এটি।