শীর্ষবিন্দু নিউজ: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ আমদানি আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। চলবে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। প্রাথমিক পর্যায়ে ভারত থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।
পর্যায়ক্রমে সরবরাহ বাড়িয়ে অক্টোবরের শেষ নাগাদ সরবরাহের পরিমাণ ১৭৫ থেকে ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থা থেকে আমদানি করা এ বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকার বেশি পড়বে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ইউনিট প্রতি গড় উৎপাদন ব্যয় ৫ টাকা। ইউনিট প্রতি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতের দাম আরও বেশি।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) এক কর্মকর্তা বলেন, ৬ই সেপ্টেম্বর ২৩০ কেভির লাইনটি পরীক্ষা করা হয়। ২৭শে সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে ৫০ মেগাওয়াট সঞ্চালন করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। তবে সঞ্চালন লাইনে কিছু কারিগরি কাজ বাকি থাকায় পুরো ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে সময় লাগতে পারে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের দাম হিসেবে ২৩০ কোটি টাকার ঋণপত্র (এলসি) খুলছে সরকার। আপাতত ইউনিট প্রতি আনুমানিক দামের বিপরীতে এ অর্থের এলসি খোলা হয়েছে। পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ দেয়া শুরু হওয়ার পর পরই বিদ্যুতের দাম চূড়ান্ত করবে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বা তার প্রেরিত প্রতিনিধি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বিনিময় কার্যক্রম উদ্বোধন করতে পারেন। একই সময় বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা রয়েছে।
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাবদ প্রতি মাসে ৫২ কোটি রুপি বিল প্রাক্কলন করা হয়েছে। ভারত তার বিভিন্ন প্রদেশের সঙ্গে মিলিয়ে একই দামে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেবে। তাই সময়ে সময়ে ভারতের বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণকারী কমিশন সিইআরসি এ দামের পরিবর্তন করতে পারবে।
পিডিবি’র এক সদস্য জানিয়েছেন, আপাতত একটি আনুমানিক ব্যয় ধরে ঋণপত্র খোলা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের পর প্রতি মাসে জমা করা ইনভয়েস দেখেই বিল পরিশোধ করা হবে। এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পরে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশটির সরকারি খাত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে দেয়া যেতে পারে। বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৯৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১২০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।