শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫৮

দেশে সঙ্কট তৈরিতে কাজ করছেন সুশীল সমাজই

দেশে সঙ্কট তৈরিতে কাজ করছেন সুশীল সমাজই

/ ১৩২
প্রকাশ কাল: রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

শীর্ষবিন্দু নিউজ: সুশীল সমাজই দেশে সংকট তৈরি করছে। তারা চুপ থাকলেই দেশের সংকট কেটে যাবে। আমি দেশে কোন ধরনের সংকট দেখি না। জাতিসংঘকে বলেছি আপনারা যত খুশি পর্যবেক্ষক পাঠান। দেখেন আমি সুষ্ঠ নির্বাচন করতে পারি কিনা। আমি সুষ্ঠ নির্বাচনের গ্যারান্টি দিচ্ছি। গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে চা খেতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমি চা খেতে পছন্দ করি। কাজেই তার সঙ্গে তো চা খেতেই পারি। আমি আমার দেশ ও জনগণের স্বার্থে সব সময়ই নমনীয়। যদিও তিনি চান না আমি বেঁচে থাকি।

উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে সংসদে এসেও প্রস্তাব দেয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, উনি কী চান সেটা স্পষ্ট করে সংসদে এসে বলুক। তারা তো একবার একটা মূলতবি প্রস্তাব দিয়েছিল। পরে সেটা তাদের ঝামেলার কারণে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। সেটা নিয়ে তো আলোচনা করা যেতো। এ সময় তিনি বিএনপিকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে আমাদের সঙ্গে এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করুন। তখন দেখবেন সংকট কেটে গেছে। আর তা না হলে দেখা যাবে আবারও যুদ্ধাপরাধীদের হাতে পতাকা যাবে। আমাকে ও আওয়ামী লীগকে নিচে নামাতে পারেন। কিন্তু যাকে ওপরে উঠাচ্ছেন তারা কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষক।’ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিয়ে ছয়দিনের কর্মসূচি ও অর্জন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এটা নিয়ে লংমার্চ করছেন, তারা একবার পায়ে হেটে সুন্দরবন ঘুরে দেখুক। মংলা গিয়ে থেমে গেলে হবে না। বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাচবে। যারা আন্দোলন করছেন, তারা এই বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে ধারনাই নেই।

বিগত পাঁচটি সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার পেছনে মিডিয়াকে অভিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্য মিডিয়াও কিছুটা দায়ী। আমরা অনেক ভালো কাজ করেছি। কিন্তু ভালো কাজ করলেও মিডিয়ার কেন এই কৃপণতা। নেগেটিভ নিউজ না করলে পত্রিকা চলবে না। যারা এটা চিন্তা করে খবর ছাপায় তারা সাইকোলজিক্যাল প্রবলেমে ভোগে। এতে যে দেশের ক্ষতি হয়, এটা তারা ভাবেন না। অনেক সময় গণমাধ্যমে অপপ্রচারও চালানো হয়। আমাদের দেশের মানুষ সরলমনা। এসব খরব পড়ে তারা দ্রুত বিভ্রান্ত হয়ে যায়। পাঁচ সিটিতে আমরা অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। আমাদের কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল না। তারপরও ভোট পেল না। কারা জিতল?

যারা যুদ্ধাপরাধের বিচার চায় না। দেশবাসীকে বলতে চাই, ভবিষ্যৎ চিন্তা করে যেন তারা ভোট দেন। তাৎক্ষণিক সুবিধার কথা যেন তারা চিন্তা না করেন। প্রত্যেকটি নির্বাচন এলেই তার আগে সমস্যা তৈরি হয়। মিলিটারি শাসন এসেছে। ক্যু হয়েছে। মিলিটারি ব্যাক সরকার এসেছে। আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে চাই। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাই। কাউকে না কাউকে এটা শুরু করতে হবে।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৬০ আসনও না পাওয়ার সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। মহাজোট আছে। আর আগামী নির্বাচনেই বোঝা যাবে কে কত আসন পায়। দেশের জন্য জনগনের স্বার্থে যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। ক্ষশতায় এসে নিজের আখের গোছাতে চাই না। এসময় আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যাদেরকে আপনারা সুশীল সমাজ বলছেন, তারা কেউ আমলা ছিল, কেউ রাজনৈতিক দল করে ব্যর্থ হয়েছেন। যারা সংকট সংকট করছে তাদের মনের ভেতরে সংকট বেশি। তারাও বিভিন্ন সময় কোনো না কোনো পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তখন তাদের কী ভ’মিকা ছিল, কে কী করেছে, সেটা খুঁজে দেখলেই বোঝা যাবে। এক শ্রেনীর লোক দেশে সংকট তৈরি করে। এটা করলে তাদের পোস্ট পজিশন বাড়ে। যেকোনো সরকারের শেষ তিন মাসে এ ধরনের সুষ্ঠ পরিবেশ অতীতে কখনো ছিল না। সেটা আপনারা বিচার করে দেখতে পারেন। এমনকি কোন কোন পত্রিকার মালিকেরও একটা পতাকা পাওয়ার স্বপ্ন ছিল, সেই আফসোসও আছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। অনেকগুলো টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার অনুমোদন দিয়েছি। এখন সুশীল বাবুদের কথার ফুলঝুরি ছড়ানোর সুযোগ হয়েছে।

জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ ও দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কোর্ট তো আমাদের হাতে নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। আমি একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী হয়ে আরেকটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার কথা বলতে পারি না।

টানা এক ঘন্টার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বেঁচে থাকি তা বিরোধীদলীয় নেত্রী চান না। আমার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তারপরেও নমনীয় থেকেছি। তার নিজের ছেলের মাধ্যমে ১৩টি গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এছাড়াও কোটালিপাড়ায় বোমা পোঁতা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনককে হত্যার দিন, যে দিনটিতে আমি আমার বাবা-মা-ভাইদের হারিয়েছি সেই দিনটিকেই তিনি বেছে নিয়েছেন জন্মদিনের উৎসব করার জন্য। তার এই উদ্যোগই প্রমাণ করে বিরোধী দলীয় নেতা আমার ভালো চান না। আমি যেদিন শোক করি সেদিন তিনি মিথ্যা জন্মদিন বানিয়ে কেক কাটেন।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের আবাসিক প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আসা উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মামুন অর রশিদ।

 




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
All rights reserved © shirshobindu.com 2024