বিস্ময়কর ডেস্ক: ভারতের রাজস্থানের আজমেরের নেহেরু মেডিকাল কলেজ এক বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল। এখানে জন্ম নেয় এক শিশু পুত্র যার দুইটি মাথা।
চিকিৎসকদের মতে, দুই মাথাওয়ালা শিশু সারা পৃথিবীতেই অতি বিরল। কিন্তু বাবা-মায়ের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে এই আশ্চর্য শিশু এক অত্যন্ত বেদনাদায়ক পরিণতির মুখে পড়ল।
গত সোমবার সকালবেলা এক ২০ বছরের মা নেহেরু মেডিকাল কলেজে জন্ম দেন এই শিশুটির। জন্মের আগে গর্ভবাসের মেয়াদ সম্পূর্ণ করেছিল শিশুটি। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ২.৫ কেজি। জন্মের পরে সুস্থ ছিলেন মা। সুস্থ ছিল শিশুটিও। তবে সামান্য শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় বাচ্চাটিকে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখার সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তাররা।
হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডাক্তার জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেন, আদপে এটি সংযুক্ত যমজ বাচ্চার ঘটনা। মায়ের গর্ভে দু’টি যমজ শিশু দু’টি আলাদা শরীর ধারণ করার পরিবর্তে যখন একটি শরীর ধারণ করে তখনই এরকম ঘটনা ঘটে।
ডাক্তার নারায়ণ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, শিশুটির মাথাই কেবল দু’টো নয়, শরীরের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও দু’টো করে। কিন্তু হাত -পা একজোড়া। ফলে অনেক সময় এরকম সংযুক্ত যমজকে অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করা সম্ভব হলেও, এক্ষেত্রে তা ছিল অসম্ভব।
ডাক্তাররা শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। ডাক্তার নারায়ণ বলেন, এই ধরনের শিশু জন্মের পরে-পরেই নানা শারীরিক জটিলতার সম্মুখীন হয়। আমরা তাই কোনওভাবেই শিশুটিকে জন্মের পরবর্তী কয়েকদিন হাসপাতালের বাইরে যেতে দিতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু শিশুটির মা এবং ২৪ বছর বয়স্ক বাবা তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জেদাজেদি শুরু করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হন তাকে তার বাবা-মার হাতে তুলে দিতে।
কিন্তু বাবা-মা তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ৩২ ঘন্টার মধ্যেই খবর আসে যে, শিশুটি মারা গিয়েছে। এই ঘটনায় তার বাবা-মা শোকে ভেঙে পড়েছেন। এখন তাদের বোধোদয় হয়েছে যে, তাদের সন্তানকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা উচিৎ হয়নি।
তারা আক্ষেপ করছেন, কী জানি, ডাক্তারবাবুদের কথা শুনে ছেলেটাকে হাসপাতালে রেখে দিলে হয়তো ও বেঁচে যেত!
ডাক্তার নারায়ণও দায়ী করছেন শিশুটির বাবা-মাকে। বলছেন, আমাদের পরামর্শ মানলে এভাবে চলে যেত হত না শিশুটিকে।