শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৪

নির্বাচনের ঠিক আগে এফবিআই প্রধানের চিঠির রহস্য কী

নির্বাচনের ঠিক আগে এফবিআই প্রধানের চিঠির রহস্য কী

শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের ঠিক ১০ দিন আগে মার্কিন কংগ্রেসকে ’র দেয়া একটি চিঠি নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। শুরুতে এ চিঠির বরাতে সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরোয়, হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্তে নামছে এফবিআই। পরে অবশ্য জানা যায়, আদতে তা নয়।

জেমস কমি তার চিঠিতে বলেছেন, এফবিআই অন্য একটি বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে হিলারির কিছু ইমেইল খুঁজে পেয়েছে। যা তার ইমেইল সংক্রান্ত জুলাই মাসের তদন্তের সঙ্গে যুক্ত হতেও পারে।

জেমস কমি এই যদি, কিন্তুর চিঠি কেন লিখলেন কংগ্রেসকে তা নিয়ে দুনিয়া জোড়া নানা আলোচনা। হিলারি ক্লিনটন এরইমধ্যে বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এ চিঠি কি মার্কিন নির্বাচনে কোনো প্রভাবক ভূমিকা রাখবে? যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ দৈনিক প্রথম আলো’তে লেখা তার কলামে একই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অনেক কর্মকর্তাই একে ‘অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করেন।

কিন্তু মনে হচ্ছে যে কমি রক্ষণশীলদের সমালোচনার কারণে এক ধরনের চাপ বোধ করেছেন যে এখন যদি এই ইমেইলের বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, তবে তিনি শপথ নিয়ে কংগ্রেসকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন, যা আইনের বরখেলাপ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এসব বাধ্যবাধকতার বিষয় বিবেচনায় নিয়েও প্রশ্ন উঠছে, যেহেতু তার হাতে সুস্পষ্ট কোনো কিছুই নেই এবং যেহেতু তিনি চিঠিতেও বলেছেন যে তিনি গতকাল জেনেছেন এবং এসব ইমেইলে গোপনীয় কিছু আছে কি না, তা নির্ধারণের জন্য তদন্তকারী ব্যক্তিদের নিরীক্ষার লক্ষ্যে এফবিআইয়ের যথাযথ তদন্তের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তাতে এটা স্পষ্ট যে এ ইমেইলগুলো আদৌ সংশ্লিষ্ট কি না, এমন প্রমাণও হাতে নেই।

এই অস্পষ্টতার কারণেই এখন প্রশ্ন উঠছে, কমির এই চিঠি রাজনৈতিক প্রভাবের চেষ্টা কি না। সিএনএনের আইনবিষয়ক বিশ্লেষক জেফরি টুবিন, যিনি একজন বিশিষ্ট সাংবিধানিক আইনবিষয়ক গবেষক বলেও পরিচিত, স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে এফবিআইয়ের একটি অলিখিত নীতি রয়েছে। তাহ হলোÑ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিনের ৬০ দিন আগে থেকে এমন কিছু না করা, যা নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

টুবিনের এই বক্তব্য ছাড়াও অনেকে একটি আইনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তা হলো ১৯৩৯ সালে প্রণীত এবং ২০১২ সালে সংশোধিত ‘হ্যাচ অ্যাক্ট’। এ আইনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের নির্বাহী বিভাগের কেউ কোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক একটি সংগঠন শুক্রবারই আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভিযোগ দাখিল করেছে। যদিও যতক্ষণ পর্যন্ত এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করা যাচ্ছে না যে জেমস কমির আচরণ রাজনৈতিক বিবেচনাপ্রসূত, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি কেবল একটি অভিযোগ বলেই বিবেচিত হবে।

কিন্তু এই অভিযোগ যে উঠেছে, সেটিও আলোচনায় আসবে এবং ইমেইল বিতর্কের পাশাপাশি কমির ভূমিকাও বিতর্কের বাইরে থাকবে না। কিন্তু এসবের পাশাপাশি যে বিষয়ে সবার চোখ থাকবে এবং যে আলোচনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তা হলো, কমির এই চিঠি হিলারির জন্য কতটা ক্ষতি বয়ে আনবে।

ইতিমধ্যে হিলারি ক্লিনটন যেহেতু স্পষ্ট করেই দাবি করেছেন, এফবিআইয়ের কাছে যে তথ্য আছে, সব তথ্যই প্রকাশ করা হোক। সেহেতু তাঁর প্রতিপক্ষ এই অভিযোগ করতে পারবেন না যে তিনি কিছু লুকাতে চাইছেন। তার অর্থ এই নয় যে তিনি সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত; অতীতে ইমেইল বিষয়ে অস্বচ্ছতার কারণে হিলারি অবশ্যই প্রশ্নের মুখে থাকবেন।

কিন্তু কমির এই চিঠির উত্তরে হিলারি শিবির যদি এটা তুলে ধরতে পারে যে এখন পর্যন্ত আসলে কেউ কিছুই জানেন না এবং হিলারি চাইছেন সব প্রকাশ করা হোক, তবে তার পক্ষে এর ক্ষতি অনেকটাই মোকাবিলা করা সম্ভব।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024