শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫

রাবিনা খানকে টাওয়ার হ্যামলেটসে ২০১৮ সালের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা

রাবিনা খানকে টাওয়ার হ্যামলেটসে ২০১৮ সালের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ২০১৮ সালের টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র নির্বাচনে কাউন্সিলার রাবিনা খানকে জনতার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। মহুর্মূহু করতালির মধ্যদিয়ে উপস্থিত জনতা রাবিনা খানকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে স্বাগত জানান।

সমাবেশে টাওয়ার হ্যামলেটসের ২০টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গসহ ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ, যুবক ও তরুন-তরুণী উপস্থিত ছিলেন। ১ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের ওয়াটারলিলি ব্যানকুয়েটিং হলে আযোজিত বিশাল জনসমাবেশে টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি অ্যালায়েন্স এর পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

ল্লেখ্য, কাউন্সিলার রাবিনা খান ২০১৫ সালের মেয়র নির্বাচনে বর্তমান মেয়র জন বিগসের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় ২৭ হাজার ভোট লাভ করেছিলেন।

২০১৮ সালে তাঁকে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। কাউন্সিলার রাবিনা খান বিশাল জনসমাবেশে সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান সমর্থিত টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্ডিপেন্ডেন্ট গ্রুপ থেকে পদত্যাগ করে নিজেকে জনতার মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।

বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও সাবেক কাউন্সিলার রাজন উদ্দিন জালালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সেন্ট পিটার্স বেঙ্গলী অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব আতিক মিয়া।

জনসমাবেশের শুরুতে বক্তব্য রাখেন তরুণ কমিউনিটি নেত্রী রৌজি জামান। আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা আনোয়ার হোসেন, সামছুল হক, গেইরিং রেডিং, ইছবাহ উদ্দিন, জুলি জহুরা, ব্যারিস্টার গৌছ খান ও কলা মিয়া। এ সময় সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলার আমিনুর রহমান খান ও কাউন্সিলার শাহ আলম।

জনসভায় রাজন উদ্দিন জালাল বলেন, আমি গত ৪০ বছর যাবত টাওয়ার হ্যামলেটসের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি মনেকরি রাবিনা একজন যোগ্য প্রার্থী। টাওয়ার হ্যামলেটসকে নেতৃত্ব দেয়ারমত তাঁর যোগ্যতা রয়েছে। লোকাল হেলথ সার্ভিসহ টোরি পার্টির অপরাজনীতির বিরুদ্ধে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশীরা ঐতিহ্যগতভাবে লেবারের সমর্থক হলেও লেবার পার্টি বাংলাদেশীদের বারবার বঞ্চিত করেছে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

সভাপতির স্বাগত বক্তব্যে আলহাজ্ব আতিক মিয়া বলেন, বর্তমান মেয়র ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশীদের স্বার্থবিরোধী কাজ চলছে। ১৮টি ইয়ুথ সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। বাংলা স্কুল বন্ধের অপচেষ্টা চলছে। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসে অস্বাভাবিকভাবে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি, বর্ণবাদের উত্থান, ইয়ূথ ওয়ার্কার জাকারিয়ার উপর পুলিশী নির্যাতনের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এসব ব্যাপারে বর্তমান মেয়র তাঁর দায় এড়াতে পারেন না।

তিনি মেয়র প্রার্থী রাবিনা খান সম্পর্কে বলেন, ২০১৫ সালে মাত্র তিন সাপ্তাহের ক্যাম্পেইনে তিনি ২৭ হাজার ভোট পেয়েছেন। এটি তাঁর কম সফলতা নয়। এবার তিনি বিজয়ী হবেন ইনশাল্লাহ। কমিউনিটি নেতা আনোয়ার হোসেন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, যে ব্যক্তি ২৭ হাজার ভোট পেল তাঁকে কোনো কারণ ছাড়াই কেন বাদ দেয়া হয়েছে এজন্য তাঁকে জবাবদিহী করা উচিত।

তিনি বলেন, জনতার জয় হবেই হবে। কমিউনিটি নেতা সামছুল হক বলেন, আমার বিশ্বাস আজকের এই উপস্থিতি রাবিনা খানকে ভবিষ্যত বিজয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে। জনগন তাঁর সাথে আছে এবং থাকবে।

গেইরি রেডিং তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি মনে করি রাবিনা একজন যোগ্য প্রার্থী। হাউজিং, ফ্রি স্কুল মিলসহ অনেক বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে।

কমিউনিটি নেতা মোঃ ইছবাহ উদ্দিন বলেন, কমিউনিটির মানুষ রাবিনাকে আবারো মেয়র প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় এবং বিজয়ী করতে চায়। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

জুলি জুহুরা বলেন, রাবিনা তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী। আমরা তাঁকে সমর্থন দিয়ে যাব।

ব্যারিস্টার গৌছ খান বলেন, আমি মনেকরি রাবিনা এখন জনগনের প্রার্থী, কারণ তিনি এখন আর কোনো দল সমর্থন করেন না। আর একারণেই আমি তাঁকে সমর্থন করেছি। জনগনও তাঁকে সমর্থন দিয়ে যাবে।

কাউন্সিলার রাবিনা খান বলেন, কাউন্সিলারগণ মেয়র নির্বাচন করেন না, মেয়র নির্বাচন করে বারার জনগণ। আমরা ২০১০ সালে তা প্রমাণ করেছি এবং ২০১৮ সালে আবারো তা প্রমাণ করব। তিনি ২০১৫ সালের নির্বাচনের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচনকালিন সময়ে বিভিন্ন গ্রুপ মহিলাদের ভোট দেয়া ঠিক হবে না বলে প্রচারণা চালান- এ কারণে অনেক মুসলিম ভোটার ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন। আমার পরাজয়ের এটি একটি অন্যতম কারণ। এই রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি একজন বাংলাদেশী হিসেবে গর্ববোধ করি এবং একজন বৃটিশ মুসলিম হিসেবেও গর্বিত।

তিনি বলেন, রাজনীতি জনগনের জন্য, জনগনের স্বার্থে। অন্য কারো জন্য নয়। মডার্ণ ব্রিটেনে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিতে আসতে উৎসাহ দিতে হবে। যার কারণেই প্রার্থী হয়েছি। তিনি বলেন, আমি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করে যাবো। বারার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা, আরো অধিক সংখ্যক গৃহ নির্মাণ, ইয়ুথদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, শিক্ষার আরো উন্নয়নে নিরলস কাজ করতে চাই।

জনসমাবেশে রাবিনা খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, তিনি তার পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস বারার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও হাউজিং সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন। তিনি বলেন, কোন দল বা সম্প্রদায়ের নয়, তিনি হবেন বারার সকল শ্রেণীর মানুষের মেয়র।

তিনি তাঁর বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হোয়াইটচ্যাপেল ওয়ার্ডের আসন্ন উপ-নির্বাচনে জনতার প্রার্থী হিসেবে সাফি উদ্দিন আহমদকে পরিচয় করিয়ে দেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024