স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালেরর প্রটোকল বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সংবিধানে এই সংশোধনী আনা প্রয়োজন। আর সেজন্য ভারতীয় পার্লামেন্টের দুই কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার, ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের যা নেই। বিজেপির সমর্থন আদায় করতে না পারলেও বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংবিধান সংশোধনের বিলটি সোমবার রাজ্যসভায় তুলছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার।
গত মাসের শেষ দিকে দিল্লি সফরে গিয়ে রাজ্যসভায় বিরোধী-দলীয় নেতা বিজেপির অরুণ জেটলির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। অরুণ জেটলি সে সময় দীপু মনিকে বলেছিলেন, দলের মধ্যে আলোচনা করে তারা এ বিষয়ে জানাবেন। ওই সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন দীপু মনি। তারাও চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান। কিন্তু বিজেপি অনড় থাকায় চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে যাওয়ার শঙ্কার মুখে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বুধবার এই বিল নিয়ে বিজেপি নেতা এল কে আদভানি, অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেও তাতে কোনো ফল আসেনি। বরং বিজেপি নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকর করতে ভারতের সংবিধান সংশোধনের বিলে তারা সমর্থন দেবে না।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, ‘কৌশলগত কারণে’ বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টির নিস্পত্তি করতে চায় কংগ্রেস সরকার, কারণ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচনী ভাবমূর্তি জড়িত। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থলসীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের আওতায় ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের সাত হাজার ১১০ একর আয়তনের ৫১টি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের মোট ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল বিনিময়ের কথা রয়েছে, যা নিয়ে বিজেপির আপত্তি।
গত সোমবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা বলেন, মনমোহন সিংয়ের উচিৎ ছিল ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরে স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকলে সই করার আগে বিজেপির মতামত নেয়া। তা না করে কংগ্রেস এখন সমর্থন চাইছে।
কংগ্রেস সরকার এ বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যসভায় বিল তোলার উদ্যোগ নিলেও বিরোধী দলের বিরোধিতায় তা আটকে যায়। এরপর পার্লামেন্টের বর্ষাকালীন অধিবেশনে আবারো বিলটি তোলার জন্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ বিরোধী দলের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা শুরু করেন।
Leave a Reply