শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৫

বৃটিশ আইনজীবীর পূর্বাভাষ: ভয়াবহভাবে সুপ্রিম কোর্টে হেরে যেতে পারেন তেরেসা মে, দেখা দিতে পারে সাংবিধানিক সঙ্কট

বৃটিশ আইনজীবীর পূর্বাভাষ: ভয়াবহভাবে সুপ্রিম কোর্টে হেরে যেতে পারেন তেরেসা মে, দেখা দিতে পারে সাংবিধানিক সঙ্কট

শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ব্রেক্সিট নিয়ে আইনী লড়াইয়ে ভয়াবহভাবে হেরে যেতে পারেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে।

নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ৫ই ডিসেম্বর থেকে। সেখানে বিচারক থাকবেন ১১ জন। তাদের সবাই হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখতে পারেন। এমন পূর্বাভাষ দিয়েছেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স-এর আইনের প্রফেসর এমেরিটাস মাইকেল জান্দার কিউসি। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

এর আগে হাইকোর্ট তার রায়ে বলে, পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ সক্রিয় করা যাবে না। এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে। আগামী ৫ই ডিসেম্বর এর শুনানি হবে। প্রফেসর মাইকেল জান্দার বলেছেন, হাইকোর্টের বিচারকরা সর্বসম্মত ও শক্তিশালী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী একাই অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করতে পারবেন না। আগামী সপ্তাহে যখন সুপ্রিম কোর্টে আপিলের শুনানি হবে সেখানে ভিন্ন কোনো ফল পাওয়ার আশা সরকারকে হয়তো তার কোনো আইনজীবী নাও দিতে পারেন। এ বিষয়ে তিনি আইন বিষয়ক ম্যাগাজিন কাউন্সেলে একটি বিশ্লেষণে এসব কথা বলেছেন।

তিনি লিখেছেন, হাইকোর্ট সর্বসম্মতভাবে ও দৃঢ়তার সঙ্গে যে রায় দিয়েছেন তার উল্টো রায় আসবে (সুপ্রিম কোর্ট থেকে), এমন আশা যদি মন্ত্রীদেরকে এটার্নি জেনারেল, তাকে সহায়তাকারী টিম ও অন্য আইনজীবীরা দিয়ে থাকেন তাহলে আমি বিস্মিত হবো।

তিনি লিখেছেন, ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো এ আপিলের শুনানি হচ্ছে (সুপ্রিম কোর্টের) ১১ জন বিচারকের উপস্থিতিতে। আমার দৃষ্টিতে এতে সরকার ১১-০তে হেরে যেতে পারে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, এ শুনানির পর জানুয়ারির শুরুতে কোর্ট তার সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। সরকার যদি এতে হেরে যায় তাহলে অবিলম্বে তারা সংক্ষিপ্ত তিন লাইনের (থ্রি লাইন) বিল আনবে। তা নিয়ে হাউজ অব কমন্সে তিন দিন ধরে বিতর্ক হবে। এর মধ্য দিয়ে ব্রেক্সিটকে তার পথে ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে।

ওদিকে আগামী মার্চ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। এই অনুচ্ছেদ সক্রিয় করলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেন বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সময় পাবে দু’বছর। অর্থাৎ ২০১৯ সালের বসন্তের মধ্যে তাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে হবে।

তবে এই প্রক্রিয়ায় নিজেদের অধিকার বা কথা বলা বা ভূমিকা রাখা নিয়ে স্কটিশ ও ওয়েলস সরকারকে কোর্টে আলাদা দুটি মামলা করার সুযোগ দেয়া হবে। ওই মামলার শুনানিতে অনুচ্ছেদ ৫০ সক্রিয় করা ও ব্রেক্সিট বিষয়ক কৌশলের বিষয়ে স্কটিশ পার্লামেন্টকে ভেটো দেয়ার পক্ষে রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। এমন সম্ভাবনা প্রবল।

ইন্ডিপেন্ডেন্টে এর ডেপুটি পলিটিক্যাল এডিটর রব মেরিক লিখেছেন, যদি এটাই হয় তাহলে যুক্তরাজ্য বা বৃটেন পুরোপুরি সাংবিধানিক সঙ্কটে নিমজ্জিত হবে। তাতে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তা পুরোপুরি ডুবে যেতে পারে।

এর ফলে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের পিছনের সারির নেতারা প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’কে আদালতে পরাজয় স্বীকার করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং একই সঙ্গে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ বিষয়ে পার্লামেন্টের অনুমতি নিতে বলছেন।

তারা বলছেন, আর পশ্চাৎধাবনের ঝুঁকি না নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এমনটা করতে হবে। ওদিকে কোনো কোনো মহল থেকে হাইকোর্টের বিচারকদের জনগণের শত্রু বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

কাউন্সেল ম্যাগাজিনে চেয়ারম্যান অব দ্য বার চ্যান্তাল-আইমি ডোরিস কিউসি এ বিষয়ে বৃটিশদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিচারকদের সম্মান দেখাতে। তিনি লিখেছেন, বিচারকদের পক্ষ অবলম্বন করতে (ব্যারিস্টারদের) প্রয়োজন। তারা যে শপথ নিয়েছেন সে অনুযায়ীই তারা তাদের কাজ করবেন।

কিন্তু আমাদের বিচার বিভাগ ও বিচার ব্যবস্থার উচিত জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো যাতে তারা তাদেরকে সমর্থন করেন। আমাদের সমাজে বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি মূল্যবোধ ও সম্মান থাকা উচিত। এটা যদি না থাকে তাহলে স্বাধীনতা ও স্বচ্ছ বিচার ব্যবস্থার সুবিধাগুলো হারিয়ে যাবে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024