শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা উঠে আসলো বিবিসির গোপন ক্যামেরায়

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা উঠে আসলো বিবিসির গোপন ক্যামেরায়

শীর্ষবিন্দু আন্তজাতিক নিউজ ডেস্ক: ফেলে যাওয়া ফসলের তে, জনশূন্য আগুনে পোড়া গ্রাম। যেটি দুমাস আগেও ছিল রোহিঙ্গা মুসলিমভর্তি একটি জনপদ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় এই দৃশ্যই এখন চোখে পড়ে। গত দুমাস সাংবাদিক অথবা সাহায্য সংস্থার কর্মীদের রাখাইন অঞ্চলে যাওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও বিবিসি এক বার্মিজ নাগরিককে ক্যামেরা দিয়ে সেখানে পাঠিয়ে ছবি ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন।

রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর ভেতর দিয়ে কয়েক ঘণ্টা চলার পর কজন রোহিঙ্গা নারীর দেখা পেয়েছিলেন বিবিসির ওই প্রতিনিধি। সঙ্গে কজন শিশু। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের স্বামীরা কোথায়Ñ এই প্রশ্নে তাদের একজন উত্তর দেয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্য আরেক মহিলা জানায়, তার স্বামীকে সৈন্যরা ধরে নিয়ে গেছে।

এক হিসাবে গত কয়েক সপ্তাহে ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। অনেক রোহিঙ্গা তাদের নিজেদের দুর্দশার ভিডিও তুলে বিবিসির কাছে পাঠিয়েছে। ফুটেজে এক মহিলাকে বলতে শোনা গেছে তার মেয়ে, পুত্রবধূ এবং বোনকে যৌন হেনস্তা করা হয়। কে করেছে?

প্রশ্ন করলে তিনি বলেন মিলিটারি। আর ব্লাউজের ভেতর টাকা লুকিয়ে রেখেছিলাম। সেগুলো জোর করে বের করে নিয়েছে।

ক্যামেরার ফুটেজে আরেক মহিলা বলে, ঘর থেকে বের করে ধানেেত নিয়ে বারবার ধর্ষণ করেছে। চিৎকার করলেও বাঁচানোর কেউ ছিল না।

সংশয় সত্ত্বেও এতদিন তারা অং সান সু চির বিপে কোনো কথা বলেনি। কিন্তু কূটনীতিকদের অনেকেই এখন বিস্মিত হচ্ছেন যে, রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে সেনাবাহিনী এবং সু চি একই সুরে কথা বলছেন।

সু চির অফিস থেকে এখন নিয়মিত ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে যে, সেনাবাহিনী আইন মেনেই কাজ করছে। কোনো নির্যাতন তারা করছে না। বরঞ্চ রোহিঙ্গারাই তাদের বাড়িতে আগুন দিচ্ছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেভিড ম্যাথিসন বিবিসিকে বলেন, মানবাধিকারের রক হিসেবে যে উঁচু অবস্থান তার ছিল, তা থেকে অং সান সু চি অনেকটাই সরে গেছেন।

তিনি কঠোর একজন রাজনীতিবিদ, যাকে নির্মম একটি রাজনৈতিক পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর মতো নির্মম একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে মূল্যবোধ তিনি ধারণ করতেন, তাকে তিনি সরিয়ে রেখেছেন।

তবে সু চি চাপের ভেতর পড়েছেন। সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তবে তার প্রধান করা হয়েছে সিনিয়র একজন জেনারেলকে। ফলে ওই তদন্ত যে নিরপে হবে, সে সম্ভাবনা কম। আর সে কারণে রাখাইন রাজ্যে আসলে কী ঘটছে তার পুরো সত্য হয়তো জানা যাবে না।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024