শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুর। সেখানকার ৮২ বছর বয়সী এক নারী যেন বলিউডের এক নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছেন।
মারা যাওয়ার ৪০ বছর পরে তিনি ফিরে এসেছেন দুই মেয়ের কাছে। তাকে ফিরে পেয়ে মেয়েরা তো হতভম্ভ। একই সঙ্গে তাদের আনন্দের যেন সীমা পরিসীমা নেই।
কারণ ১৯৭৬ সালে সাপের কামড়ে মারা যান তাদের মা। তার মৃতদেহ তারা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন গঙ্গায়। ভেবে নিয়েছিলেন এর মধ্য দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন তাদের মা। কিন্তু ৪০ বছর পরে সেই মা-ই আবার তাদের কাছে ফিরে এসেছেন।
এতে বিস্মিত, উদ্বেলিত দুই মেয়ে। এখন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী, পেশার মানুষ ওই নারীকে দেখার জন্য তাদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। এ ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে অবস্থিত বিধ্বনু গ্রামে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে বলা হয়েছে, ওই নারীর নাম বিলাসা।
তিনি মাজাওয়ান শহরের ইনায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনিই এই বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। ৪০ বছর পরে শুক্রবার তিনি ফিরেছেন মেয়েদের কাছে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক গ্রামের মন্দিরে। এখন থেকে ৪০ বছর আগে তিনি গ্রামের মাঠ থেকে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। সে সময়ই তাকে একটি কালো সাপে কামড়ায়। বাড়ি ফিরলে তাকে সে সময় নিয়ে যাওয়া হয় পাশের এক গ্রামে। সেখানে ওঝার কেরামতি অকার্যকর হয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা মনে করেন তিনি মারা গেছেন। তারা তার মৃতদেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হয়। কান্নাউজ জেলার সীমান্তবর্তী একটি স্থান থেকে স্থানীয় সরাই ঠেকু এলাকার বাসিন্দা তার চেতনা ফিরিয়ে আনেন।
বিলাসা ফিরে বলেছেন, তিনি সাপের কামড়ে মারা যান নি। ওই সময় মাত্র চেতনা হারিয়েছিলেন। তাকে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার পর মাল্লারা (মাঝি) তাকে উদ্ধার করেছিল। শুক্রবার বাড়ির বাইরে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন দু’মেয়ে রাম কুমারি ও মুন্নি। মাকে দেখেই তারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান। মুখের কথা যেন আটকে যায়। কিছুতেই তারা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ৪০ বছর আগে মারা যাওয়া মা কি করে ফিরে আসতে পারেন বাড়িতে।
বড় মেয়ে রাম কুমারী বলেন, মা বলেছেন, সাপের কামড়ের পর তিনি চেতনা ও স্মৃতিশক্তি হারিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে সব মনে পড়ে যায় তার। তিনি এ নিয়ে একটি মেয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন।
ওই মেয়েটি তার এক আঙ্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে। তিনি আবার যোগাযোগ করেন চিত্রম (৮২) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। চিত্রম জানান, তিনি তো বিলাসার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর তিনি বিলাসার দু’মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বিলাসা যখন মেয়েদের কাছে ফিরে আসেন তখন তার ছোটমেয়ে মুন্নি তাকে সনাক্ত করে একটি জন্মদাগ দেখে। ব্যাস মেয়েরা ফিরে যান তাদের হারানো মাকে।