শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৩

ভোলায় চরাঞ্চলে নির্বিচারে চলছে অতিথি পাখি নিধন

ভোলায় চরাঞ্চলে নির্বিচারে চলছে অতিথি পাখি নিধন

এস আই মুকুল: উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার চরাঞ্চলে অতিথি পাখি শিকার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। বিষটোপ ও জাল দিয়ে প্রতিদিন শত শত অতিথি পাখি নিধন করা হচ্ছে। স্থানীয় বন বিভাগ ও প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এ বছরো হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে শীত প্রধান দেশ থেকে লাখ লাখ অতিথি পাখি উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার চরফ্যাশনের তারুয়া, কুকরিমুকরি, মনপুরা, ঢালচর, চর পালিতাসহ অন্তত ২০-৩০টি চরে আসে। বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের কলকাকলিতে চরগুলো মুখর হয়ে উঠেছে। অতিথি পাখিগুলো এখানে উষ্ণতা পেলেও নিরাপদ আবাসস্থল পায়নি। শিকারিদের দৌরাত্ম্যে পাখির কোনো নিরাপত্তা নেই। খাদ্যের সন্ধানে রং-বেরঙের পাখা মেলা এসব পাখি উড়তে গিয়েই শিকারিদের হাতে মারা পড়ছে। ধানের সঙ্গে বিষাক্ত রাসায়ানিক দ্রব্য মিশিয়ে ও জাল ফেলে নির্বিচারে পাখি শিকার চলছে।

ভোলাসহ উপকূলীয় যেসব চরে অতিথি পাখিদের ব্যাপক অবস্থান রয়েছে এগুলো হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা মনপুরার চর নিজাম, ঢালচর, চরফ্যাশনের চর শাহজালাল, চর শাজাহান, কুকরির পশ্চিম চর, চর পিয়াল, আইলউদ্দিন চর, লালমোহনের কচুয়ার চর, মেঘনার মাঝের চর, শিবপুর চর, হাতিয়ার চর বারি, নিঝুম দ্বীপ, দমার চর, টেগরারচর। বাংলাদেশে আসা অতিথি পাখিদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোলার উপকূলে আসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাঝি বলেন, প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরতে গেলে মেঘনায় অসংখ্য মরা অতিথি পাখি ভাসতে দেখি। এছাড়া চরাঞ্চলে অতিথি পাখি মরে পড়ে থাকে। কতিপয় অসাধু জেলে ভাটার সময় নদীতে কিটনাশন জাতীয় দ্রব্য ধানের সাথি মিশিয়ে ছিটিয়ে দেয়। ওই ধান খেয়ে পাখি গুড়ে পড়ে যায়। অনেক পাখি উড়ে অন্যত্র গিয়ে নদী মরে পড়ে যায়। পাখি শিকারী দল অসুস্থ্য ও মৃত পাখি জবাই করে বাজারের ব্যাগে করে বিভিন্ন হোটেলে ও বাসা বাড়িতে ফেরি করে বিক্রি করে। এসব পাখি গোপনে প্রতি পিস বিক্রি হয় ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা করে।

স্থানীয়দের মতে, এভাবে একের পর এক পাখি শিকার হলেও পাখি শিকার বন্ধে নেই কোন কার্যকর ব্যবস্থা। এতে শীতের আগমনী পাখিদের কলতানে মুখর চরগুলোর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। ভোলার জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে এ সব পাখির লালন জরুরী। পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা সম্ভব না হলে শিগ্রই এ অঞ্চলটি পাখি শুন্য হয়ে পরবে বলে মনে করেন।

ভোলা সিভির সার্জন ডা: রথিন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে নিধন করা এসব অতিখি পাখি মানব দেহের খাদ্য নালিতে প্রদাহ হবে। বার বার এসব খাবার খেলে লিভার কিডরি আক্রান্তসহ ক্যান্সার হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিষ দিয়ে ধরা এসব পাখি খেলে মানুষের ডিকনিসহ স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি পরিবেশের অন্য প্রাণিদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: প্রদীপ কুমার কর্মকার।

ভোলা কোস্টগার্ড দক্ষিন জোনের অপারেশন অফিসার লেঃ নাজিউর রহমান সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, শিকারীদের হাত থেকে পাখি রক্ষায় তারা নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিশেষ ভাবে তৎপর রয়েছে। অভিযানের জন্য তাদের সকল ষ্টেশনকে ইতো মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024