শীর্ষবিন্দু নিউজ: পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুনের ঘটনায় ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে ঐশীর প্রেম ও মাদকাসক্তির বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। দুপুরে আত্মসমর্পনের পর ডিবি কার্যালয়ে ঐশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঐশীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যদের ধরতে পূরান ঢাকার ওয়ারি ও গেন্ডারিয়ায় অভিযানে বের হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের সঙ্গে ঐশীও রয়েছে। পল্টন থানার ওসি গোলাম সারোয়ার দুপুরে ঐশীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেয়ার বিষয়টি গণমাশ্যমকে জানান।
তিনি জানান, ঐশী দুপুরের দিকে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে। পরে তাকে মতিঝিল ডিসি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর সেখান থেকে নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। গতকাল বিকালে চামেলীবাগের বাসা থেকে মাহফুজ দম্পতির লাশ উদ্ধার করা হয়। এর একদিন আগে থেকে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়য়া মেয়ে ঐশী রহমান (১৬) ও গৃহকর্মী সুমি (১১) নিখোঁজ ছিল। মাহফুজুর এসবির রাজনৈতিক শাখায় কাজ করতেন। চামেলীবাগে ‘চামেলী ম্যানশন’ নামের বাড়ির ছয়তলার একটি বাসায় তিনি স্ত্রী, মেয়ে, ছেলে ঐভী রহমান (৮) ও গৃহকর্মীকে নিয়ে থাকতেন। খুনের ঘটনায় ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী মো. মোতালিব ও মো. শাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইরে তালাবদ্ধ ওই ফ্ল্যাটের একটি বাথরুম থেকে মাহফুজ (৪৫) ও স্বপ্নার (৪২) ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাহফুজের ভাই মনসুর রহমান বাদী হয়ে শনিবার মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মাহফুজ ও স্বপ্না দম্পতির লাশের ময়না তদন্ত হয়। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপেশাদার ব্যক্তিদের ছুরির আঘাতে মাহফুজ ও তার স্ত্রী মারা গেছেন। নিহত পুলিশ কর্মকর্তার দেহে ছুরিকাঘাতের দুটি এবং তার স্ত্রীর দেহে ১১টি চিহ্ন রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন বলেও ধারণা করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ঐশী এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজ ও তার স্ত্রী স্বপ্নার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের পর থেকে ঐশীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ঐশীকে খুঁজে পেলে হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা পাওয়া যাবে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন। মাহফুজের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ঐশী একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে ঐশী সাত বছর বয়সী ছোট ভাই ঐহী ও গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বলে ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন। শুক্রবার সকালে একটি রিকশায় করে ঐহীকে এক আত্মীয়ের বাসায় পাঠানো হয়। এর আগে টেলিফোনে স্বজনদের সঙ্গে ঐশীর কথাবার্তা সন্দেহজনক বলে পুলিশের কাছে মনে হয়েছে।
Leave a Reply