শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন ব্রাজিলে নিযুক্ত গ্রিসের রাষ্ট্রদূত কিরিয়াকোস আমিরিদিস (৫৯)। ব্রাজিলের পুলিশ মনে করছেন রাষ্ট্রদূত আমিরিদিসের স্ত্রী ফ্রাঁসিস আমিরিদিসের (৪০) সঙ্গে স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তার গোপন প্রণয় চলছিল। সেই প্রেমের বলি হয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
ওই গোপন প্রেমিকের নাম সার্জিও গোমেজ মোরেইরা ফিলহো (২৯)। দু’জনে মিলে রাষ্ট্রদূতকে হত্যার ছক তৈরি করে। সেই ছক অনুযায়ী তাকে হত্যা করে মোরেইরা ফিলহো। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফ্রাঁসিস আমিরিদিস, তার প্রেমিক মোরেইরা ফিলহো ও এডুয়ার্ডো মেলো নামে তার এক কাজিনকে। গ্রেপ্তার করার পর ফিলহো হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, গ্রিসের রাষ্ট্রদূত কিরিয়াকোস আমিরিদিস গত সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তারপর তাকে অনেক খোঁজাখুজি হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাজধানী রিও ডি জেনিরোর বাইরে একটি পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতর পাওয়া যায় তার মৃতদেহ। ফিলহো বলেছে, তার মিশন সফল করতে সঙ্গে নেয় কাজিন মেলোকে। এ জন্য তাকে দেয়া হয় ২৫ হাজার ডলার। গ্রেপ্তার করা তিন ব্যক্তিকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও ৩০ দিন তাদেরকে রাখা হবে পুলিশ রিমান্ডে। ঘটনা তদন্ত করছে এভারিস্টো পোন্টেস মাগালহায়েস। এ হত্যাকা-কে তিনি ট্রাজিক বলে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, এটা কাপুরুষোচিত কাজ। এ নিয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, প্রথমেই রাষ্ট্রদূতপতœী ফ্রাঁসিস হত্যাকান্ডের কথা স্বীকারই করেন নি।
তিনি বলেছিলেন এ বিষয়ে তার করার কিছুই ছিল না। তার সামনে কোনো বিকল্প ছিল না বলেও তিনি জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি স্বীকার করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলতে শুরু করেন পুলিশ কর্মকর্তা সার্জিও মোরেইরা তার স্বামীকে হত্যা করেছে।
মাগালহায়েস আরও বলেছেন, গ্রিসের ওই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক পর্যায়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল পুলিশ কর্মকর্তা মোরেইরা। তা শেষ হয়েছে তাকে হত্যার মধ্য দিয়েছ।
মোরেইরা বলেছে, সে নিজেকে রক্ষার জন্য হত্যা করেছে রাষ্ট্রদূতকে। তবে তার এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ব্রাজিল পুলিশ। দেশটির পুলিশ বলেছে, মোরেইরার কাজিন এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। বলে বলেছে, তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মৃতদেহ সরিয়ে ফেলতে। পরে সে হত্যা পরিকল্পনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ৫৯ বছর বয়সী ওই রাষ্ট্রদূত ব্রাসিলিয়া থেকে রিও ডি জেনিরোর উত্তরে নোভা ইগুয়াকু শহরে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল স্ত্রী ও তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপন করা। তাদের দাম্পত্য জীবন ১৫ বছরের। রয়েছে ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে। গত বুধবার স্বামী নিখোঁজ বলে পুলিশে রিপোর্ট করেন ফ্রাঁসিস আমিরিদিস।
এতে তিনি বলেন, আগের সোমবার থেকে তার স্বামী গাড়ি নিয়ে নিখোঁজ। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার একটি ফ্লাইওভারের নিচ থেকে ভষ্মীভুত একটি গাড়ি উদ্ধার করে। তার ভিতর পাওয়া যায় রাষ্ট্রদূতের মৃতদেহ। তা পুড়ে বিকৃত আকার ধারণ করেছিল।
ফলে তা সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু পুলিশ বলে ওটাই রাষ্ট্রদূতের মৃতদেহ। তারা তদন্ত করে দেখেছে যে বাড়িতে তারা অবস্থান করছিলেন তার সোফার ওপর রক্তের দাগ। এতে পুলিশের সন্দেহ হয় যে, কুপিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে রাষ্ট্রদূতকে।