শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: এরই মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঠিক যেন তারই প্রতিদান দিলেন পুতিন।
গোয়েন্দা তথ্য ইস্যুতে ট্রাম্পকে যে তথ্য দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ আছে তাকে পুতিন ডাহা মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে যেসব মানুষ মিথ্যা তথ্য বানায় তাদেরকে তিনি পতিতার চেয়েও খারাপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
অভিযোগ করা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৩ সালে যখন রাশিয়ার মস্কো সফরে গিয়েছিলেন তখন তিনি উঠেছিলেন রিটজ কার্লটন হোটেলে। সে সময় তার ওপর রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি করেছে।
এমন অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করলেন পুতিন। তিনি বললেন, বৃটেনের সাবেক একজন গোয়েন্দা ট্রাম্পের ওই সফর নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য প্রস্তুত করেছেন- এ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবহিত।
তবে এমন অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। প্রথমে অনলাইন সিএনএন এ বিষয়ে রিপোর্ট করে। তাতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান কর্মকর্তারা রাশিয়ার অমন ভূমিকার কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
বলা হয়েছে, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদেরকে বলেছেন, ট্রাম্প সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছে রাশিয়া। তারা প্রয়োজনমতো তাকে ব্লাকমেইল করতে এসব তথ্য ব্যবহার করতে পারে। পরে এ বিষয়ে অনলাইন বুজফিড-এ পূর্ণাঙ্গ গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
এ নিয়ে মস্কোতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। এ সময় তার পাশে ছিলেন মলদোভিয়ার প্রেসিডেন্ট। পুতিন রগরগে ও অযাচিত অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে এতে বক্তব্য রেখেছেন।
অভিযোগ আছে, ২০১৩ সালে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার সময় মস্কোতে ছিলেন ট্রাম্প। তখন তিনি যে হোটেলে উঠেছিলেন সেখানে পতিতাসঙ্গ ভোগ করেছেন এমন ভিডিও আছে রাশিয়ার হাতে। এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, এমন কথিত অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। এটা সত্য যে, ট্রাম্প মস্কো এসেছিলেন।
তবে কবে তা ঠিক মনে করতে পারছি না। হতে পারে দু’এক বছর আগে। তখন তিনি রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা সম্পর্কে আমরা জানতাম না। তিনি তখন ছিলেন শুধুই একজন ব্যবসায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ধনী ব্যক্তিদের অন্যতম।
আপনি কি মনে করেন- আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিজন বিলিয়নিয়ারের ওপর বিশেষ গোয়েন্দা সার্ভিস নিয়োগ দিয়েছি? অবশ্যই নয়। এমন অভিযোগ একেবারে বস্তাপচা। তীব্রভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করার আগে তিনি কথিত অভিযোগ নিয়ে কৌতুক করেন।
তারপর যারা এমন অভিযোগ করেছে এবং যারা প্রকাশ করেছে তাদেরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন। পুতিন বলেন, ট্রাম্প কি আসলেই এসেছিলেন এবং মস্কোর পতিতাদের সঙ্গ ভোগ করেছেন? প্রথমত, তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক।
দ্বিতীয়ত, তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি অনেক বছর ধরে সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আসছেন। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের সঙ্গে তার সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাই এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে, তিনি আমাদের হোটেলে আমাদের নিম্ন মানের মেয়েদের সঙ্গ ভোগ করেছেন। যদিও আমাদের এসব মেয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ। চূড়ান্তভাবে, আপনারা জানেন, আমি কি বলতে চাই।
পতিতাবৃত্তি হলো একটি গুরুতর, কুৎসিত, সামাজিক রীতি। যেসব যুবতী এ পেশায় জড়িত হন তার পিছনে একটি কারণ থাকে। তা হলো, তারা অন্য কোনো উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন না। এটাই হলো সমাজের সমস্যা। কিন্তু যেসব মানুষ নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য দেয়, তার বিস্তার ঘটায়, এটাকে বানোয়াট রূপ দেয়, রাজনৈতিক লড়াইয়ে ব্যবহার করে তারা পতিতার চেয়েও খারাপ।
পুতিন আরও বলেন, তিনি কখনো ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেন নি। তার ভাষায়, আমি জানি না তিনি (ট্রাম্প) আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কি করবেন। তাই তার সমালোচনা করার বা তার পক্ষ অবলম্বনের মতো কোন অবস্থান আমার নেই এখনও।