শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: সুইডেনে এক নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। নরপিশাচরা তাকে শুধু ধর্ষণই করে নি, একই সঙ্গে ধর্ষণদৃশ্য ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেছে। এ নৃশংসতায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তিন ব্যক্তিকে রোববার আটক করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়েছে, দেশটির আপসালা এলাকার এক নারী ফেসবুকে সরাসরি ওই দৃশ্য দেখতে পেয়েছেন। তার নাম জোসেফাইন লুন্ডগ্রিন (২১)। এ দৃশ্য দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেন পুলিশে। ফলে পুলিশ আটক করে ধর্ষকদের। তিনি পুলিশকে ঘটনা খুলে বলেন।
তিনি বলেন, এক নারীকে গণধর্ষণ করেছে একদল পুরুষ। এ দৃশ্য তারা ফেসবুকে সরাসরি (লাইভ) প্রচার করেছে। ফেসবুকে যারা এ দৃশ্য দেখেছেন তারা বলছেন, ধর্ষকদের একজন ভিডিওর শেষ দিকে বলতে শুনেছেন তুমি ধর্ষিত হয়েছো। তারপর সে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।
পরে পুলিশ ও অন্যরা বলেছেন, তারা ওই ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন। ফেসবুকে যে গ্রুপে ওই ভিডিও প্রচার করা হয় তাতে রয়েছে কয়েক হাজার সদস্য। সন্দেহজনকভাবে পুলিশ স্থানীয় একটি এপার্টমেন্ট থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের বয়স ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এ ছাড়া আটক করা হয়েছে এক নারীকে।
জোসেফাইন লুন্ডগ্রিন সুইডেনের ট্যাবলয়েড পত্রিকা এক্সপ্রেসেনকে বলেছেন, তিনি দেখেছেন ধর্ষকদের একজন ধর্ষিতা নারীর বস্ত্র টেনে ছিড়ে ফেলছে। এরপর তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি আরও দেখতে পান, ধর্ষকদের একজনের হাতে অস্ত্র ছিল। ফেসবুকে এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করার ফলে তা প্রত্যক্ষ করেছেন অনেক মানুষ।
লুন্ডগ্রিন বলেছেন, সম্প্রচারের সময় তিনি অন্য ৬০ জন দর্শক এ দৃশ্য দেখতে এটা জানতে পেরেছেন। ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে মন্তব্য অংশে ধর্ষকদের একজন লিখেছে, একজনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে তিন জন। হা হা হা।
অনলাইনের দর্শকরা সুইডেনের মিডিয়াকে বলেছেন, তারা একই রকম দ্বিতীয় আরও একটি ভিডিও দেখতে পেয়েছেন। তাতেও ধর্ষণ করা হচ্ছে ওই একই নারীকে। এতে সন্দেহ জেগে উঠেছে যে, তিনি স্বেচ্ছায় এমন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন কিনা তা নিয়ে।
তবে প্রথম ভিডিওটি সম্পর্কে সুইডেনের রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্র এসভিটি বলছে, ওই নারীকে ধর্ষণ করে যখন ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করা হচ্ছিল এ দৃশ্য তখন সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়। ধর্ষকরা তখনও ভিডিও প্রচার করে যাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের শেষের দিকে ফেসবুক লাইভ-প্রচার ব্যবস্থা চালু করে। এখন ঘটনাস্থল থেকে খবর প্রচারের জন্য এ মাধ্যমটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে মিডিয়া। কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি সম্প্রচারে এসে আড্ডা দেন। কেউবা মজা করেন। কিন্তু ফেসবুকে ধর্ষণ দৃশ্য সরাসরি প্রচারের ঘটনা সম্ভবত এর আগে কখনো শোনা যায় নি।
তবে এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে মানসিক ভারসাম্য হারানো এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করা হচ্ছিল। সেই দৃশ্য সরাসরি ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এ অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে চারজনকে। এর বাইরে ২০১৬ সালের জুনে শিকাগোর অ্যান্টনিও পারকিনস (২৮) নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। এ দৃশ্য তিনি সরাসরি ফেসবুকে পোস্ট করেন।