স্বদেশ জুড়ে: বর্তমান সংবিধান দিয়ে আওয়ামী লীগ যদি গায়ের জোরে নির্বাচন করে তাহলে এটা হবে জনগণের সঙ্গে বেঈমানি। এ মন্তব্য সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান ও সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবিধান থেকে এক চুলও নড়া হবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনি কোন সংবিধানের কথা বলেছেন, যে সংবিধান নিজের স্বার্থে সংশোধন করেছেন? গায়ের জোরে যদি এই সংবিধান জনগণের উপর চাপিয়ে দেন তবে তা বেঈমানি করবেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও এমন কথা বলেছিলেন। ২২ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না।
অথচ আন্দোলন করে আমরাই সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ বের করেছি। তাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকেও এ কথা মনে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা এখন বঙ্গবন্ধুর কালো কোর্ট পরে যেসব কাজ করছেন তা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দলের নেতারা দলের চাপে পরে সঠিক কথা বলতে পারছেন না। জনগণকে কীভাবে ক্ষমতার উৎস করা যায় সে চেষ্টা কোন দলের নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে আর বোকা বানাবেন না। কারন জনগণ রাস্তায় নামলে কি পরিণতি হয় তা আপনাদের জানা আছে।
নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জনগণের কথা বলতে না পারলে আপনারা রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পঞ্চদশ সংশোধনীর কথা উল্লেখ ছিল না মন্তব্য করে তিনি বলেন, তবে কেন এই সংশোধনী। নাকি তারাও খালেদা জিয়ার পথে হাঁটছেন? ছাত্র রাজনীতির কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে ছাত্ররা প্রকাশ্যে গুলি করছে তারা কিসের রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, গত ২০ বছর ধরে ডাকসুসহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর নির্বাচন হচ্ছে না অথচ এ বিষয়ে কোনো সংসদ সদস্য কি মুখ খুলছেন? তাহলে তারা কীভাবে গণতন্ত্রের কথা বলছেন।
এম হাফিজ উদ্দিন খানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধন উপস্থাপন করেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। আয়োজিত সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.)এম সাখাওয়াত হোসেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ সুশীল সমাজের নেতারা।
Leave a Reply