জাকির হোসেন কয়েছ: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে লন্ডনে প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধন করেছেন স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা।
এনিয়ে টানা পাঁচ বছর সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে মানব বন্ধনের আয়োজন করা হল। শনিবার দুপুরে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে ব্রিটিশ বাংলাদেশী সাংবাদিকবৃন্দ ব্যানারে আয়োজিত মানব বন্ধনে বিলেতের নবীন প্রবীন সাংবাদিকরা অংশ নিয়ে দ্রুত বিচার দাবী করেন।
সভায় সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবী তুলেন। তারা বলেন, এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে বাঁচাতে একটি শক্তিশালী মহল জড়িত। সভায় বক্তারা প্রধানমন্ত্রীকে কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের দায় না নিয়ে সঠিক বিচার করে জাতির প্রত্যাশা পূরনের আহবান জানান। সভায় বক্তারা সম্প্রতি সাগর রুনীর হত্যার বিষয় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।
তারা মনে করেন, যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বহুল আলোচিত এই হত্যাকান্ডের অগ্রগতি সম্পর্কে খবর রাখেন না তার ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তারা তার পদত্যাগ দাবী করেন।
সাংবাদিক সৈয়দ আনাছ পাশার সভাপতিত্বে ও সারোয়ার হোসেন এবং হেফাজুল করিম রাকিবের যৌথ পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মোস্তাক আলী বাবুল, কামাল মেহেদী, রহমত আলী, আনছার আহমদ উল্লাহ, মিসবাহ জামাল, আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, বদরুজ্জামান বাবুল, আহাদ চৌধুরী বাবু, আকবর হোসেন, আতা উল্লাহ ফারুক, আব্দুল বাছিত বাদশা, জাকির হোসেন কয়েছ, আনিছুর রহমান আনিছ, জুয়েল রাজ, পলি রহমান, রেজাউল করিম মৃধা, খিজির হায়াত খান কাওছার, তারেক চৌধুরী ইমরান, আবুল কালাম, শাহ বেলাল আহমেদ, আহসানুল আম্বিয়া সুভন, জুবায়ের আহমদ, এখলাছুর রহমান পাক্কু প্রমুখ।
সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাংবাদিক সাগর রুনির হত্যার সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন করার দাবীতে এ মাসের মধ্যে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হবে।
এদিকে নর্থ ইংল্যান্ড বাংলাদেশী টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন উক্ত মানব বন্ধনের সাথে একাত্বতা পোষন করেছে। তারাও এ হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচার দাবী করেছে।
গত ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাড়িতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির লাশ পাওয়া যায়। সাগর তখন মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যাকান্ডের সময় বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ। হত্যাকান্ডেব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে এসে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন পুলিশকে তদন্ত শেষ করার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
সেই ৪৮ ঘণ্টা এখন পাঁচ বছরে গিয়ে ঠেকেছে। ২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই মহীউদ্দীন খান আলমগীর ১০ অক্টোবরের মধ্যে সাগর-রুনির হত্যারহস্য উদ্ঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। এরপর ৯ অক্টোবর ‘চমক দেওয়া’ সংবাদ সম্মেলনে একজনকে ধরতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। পরে সেই ব্যক্তিকে ধরেও মামলার কোনো সুরাহা হয়নি।