শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: মিশরীয় এক নারী, সম্ভবত পৃথিবীর সবচে মোটা মানুষ, যার ওজন ৫০০কেজি, চিকিৎসার জন্যে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তার শরীরে ওজন কমানোর একটি অপারেশন হবে মুম্বাই শহরের স্থানীয় এক হাসপাতাল সাঈফিতে। গত ২৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম তিনি বাড়ির বাইরে কোথাও যেতে পারলেন।
এই মহিলার নাম এমান আহমেদ আবদেল আতি। বয়স ৩৬। শনিবার সকালে তিনি ভারতে গিয়ে পৌঁছেছেন। তার চিকিৎসা চলবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ।
তার জন্যে নির্মিত বিশেষ একটি বিছানায় শুয়ে ইজিপ্ট এয়ারের বিমানে করে তিনি মিশরের আলকেজান্দ্রিয়া থেকে ভারতে আসেন। প্রথমে একটি ট্রাকে করে তাকে হাসপাতালে আনা হয় এবং পরে ক্রেনের সাহায্যে পুরো বিছানাটিকেই হাসপাতালে তোলা হয়েছে।
তার চিকিৎসার জন্যে হাসপাতালে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ একটি ঘর।
ডাক্তাররা বলছেন, মিশর থেকে তাকে ভারতে নিয়ে আসাই ছিলো প্রথম চ্যালেঞ্জ এবং এই কাজে তারা সফল হয়েছেন।
ভিসা জটিলতা
এর আগে ভারতে যাওয়ার জন্যে তার ভিসা পেতেও অসুবিধা হয়েছিলো। কায়রোতে ভারতীয় দূতাবাস প্রথমে তাকে ভিসা দিতে চায়নি। এতো মোটা শরীর নিয়ে তিনি বিমানে করে ভারতে যেতে পারবেন না এই বিবেচনাতেই তার ভিসার আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।
কিন্তু ভারতীয় একজন চিকিৎসক মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা তার চিকিৎসা করার ব্যাপারে টুইট করে আগ্রহ প্রকাশের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
মুম্বাইয়ে মিশরের একজন কূটনীতিক আহমেদ খলিল বলেছেন, আবদেল আতি শেষ পর্যন্ত ভারতে আসতে পেরে খুব খুশি। কারণ বহু দিন ধরেই তিনি ভুগছেন। আশা করছি এই চিকিৎসায় তিনি সফল হবেন, বলেন তিনি।
মিস আবদেল আতির পরিবারের সদস্যরা বলছেন, গত ২৫ বছর ধরে তাদের মেয়ে ঘরের বাইরে যেতে পারছে না। বর্তমানে তার ওজন ৫০০ কেজি। পরিবারের এই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে তিনি হবেন এই পৃথিবীতে এখনও বেঁচে আছেন এরকম সবচে মোটা মহিলা।
গিনেজ রেকর্ড বুকে বর্তমানে সবচে মোটা মানুষ হিসেবে যার নাম আছে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পলিন পটার।
২০১০ সালে তার ওজন ছিলো ২৯২ কেজি।
ড. লাকদাওয়লা ওজন কমানোর বহু অপারেশন করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় দু’জন মন্ত্রীও। তার হলেন নিতিন গাডকারি এবং ভেঙ্কাইয়া নাইডু। মিস আবদেল আতির পরিবার বলছে, জন্মের সময় তার ওজন ছিলো ৫ কেজি। এসময় তার শরীরে এলিফেন্টিয়াসিস রোগ ধরা পড়ে।
এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মারাত্মক আকারে ফুলে যেতে শুরু করে। মিস আবদেল আতির মা ও বোন বাড়িতে তার দেখাশোনা করেন।
ডাক্তাররা আশা করছেন, চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। তবে তারা বলছেন, তার ওজন ১০০ কেজির নিচে নামিয়ে আনতে তিন বছরের মতো সময় লাগবে।