শরীর স্বাস্থ্য ডেস্ক: মুখের ব্রণ শুধু টিনএজারদের হয় না, ২০ থেকে ৩০ বছরের নারীদের ২০ শতাংশেরই এই সমস্যাটি হয়। স্ট্রেস, হরমোনের পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি নানা কারণে ব্রণের সমস্যা হতে পারে।
Charlottetown P.E.I এর রেজিস্টার্ড হোলিস্টিক নিউট্রিশনিস্ট রেচেল উড Haffington Post Canada কে বলেন, ব্রণের গঠনে শরীরের ভেতরের হরমোনের পরিবর্তন সর্বাধিক প্রভাব ফেলে। মানুষের হাই স্ট্রেস লাইফ স্টাইল ব্রণের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, অতএব শান্ত ও রিলাক্স থাকার চেষ্টা করুন।
তিনি আরো বলেন, শারীরিক ও মানসিক দুই ধরণের স্ট্রেসের কারণেই স্ট্রেস হরমোন করটিসল নিঃসৃত হয়ে ত্বকের পরিবর্তন ঘটায়। আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। যে সমস্ত খাবার খেলে রক্তের সুগার লেভেল বেড়ে যায় সেগুলো অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরির জন্য শরীরকে চাপ দেয় যার ফলে করটিসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
Union Square Laser Dermatology-এর প্রতিষ্ঠাতা ডারমাটোলজিস্ট ডাক্তার এ্যানি চ্যাপাস বলেন, ট্রেসের কারণে ব্রণ হয়না, বরং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ঘুমের রুটিন অথবা মুখ না ধোয়ার কারণে ব্রণ হয়।
২০১০ সালের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, খাদ্য প্রকৃতপক্ষে ব্রণের বিকাশে প্রভাব বিস্তার করে। এই আর্টিকেল এ আমরা জানবো কোন খাবার গুলো খেলে ব্রণকে প্রতিরোধ করা যায়।
১. মাছ
মাছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড থাকে যা ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কমাতে পারে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- চর্বিযুক্ত মাছ, আখরোট ইত্যাদি বেশি খেলে প্রদাহ কমে ব্রণের বিকাশকে কমাতে সাহায্য করবে।
২. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট EGCG থাকে, যা ব্রণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তাই দিনে কয়েকবার গ্রিন টি পান করুন এবং ঠান্ডা টি ব্যাগ বা ঠান্ডা গ্রিন টিতে একটুকরো কাপড় ভিজিয়ে মুখে ব্রণের উপরে ১০-১৫ মিনিট রাখুন।
৩. বিটা ক্যারোটিন
গাজর, মিষ্টি আলু, কমলা, মরিচ ইত্যাদিতে বিটা ক্যারোটিন থাকে যা শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। এই পুষ্টি উপাদানটি শরীরে সেলেনিয়াম এর শোষণ বৃদ্ধি করে যা ত্বকের জন্য উপকারি। দিনে ১/২ কাপ লাল বা হলুদ বর্ণের সবজি খান।
৪. ফল ও শাকসবজি
বিজ্ঞানীরা পাপুয়া নিউগিনি ও প্যারাগুয়ের টিনএজারদের নিয়ে গবেষণার সময় তাদের মধ্যে ব্রণের সমস্যা আছে এমন কাউকেই খুঁজে পাননি। তাদের খাদ্যাভ্যাস লক্ষ্য করে দেখা যায় যে, তাঁরা অনেক বেশি ফল ও সবুজ শাকসবজি খেয়ে থাকে এবং চিনি ও ময়দার তৈরি খাবার কম খায়। ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন ফল ও শাকসবজি খান। দৈনিক ৮টি মাঝারি আকারের ফল ও ১ কাপ কাঁচা বা ১/২ কাপ রান্না করা শাকসবজি খেতে পারেন।
৫. বাদাম
জিংক ও সেলেনিয়াম এর অভাবে ব্রণ হতে পারে। বাদামে সেলেনিয়াম, ভিটামিন ই, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে যা সতেজ ত্বকের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
এছাড়াও বাদামি চাল, রসুন, ব্রোকলি, লাল আঙ্গুর, অ্যাভকাডো, টমেটো, তরমুজ, ডিম ইত্যাদি খেলে ত্বকের জন্য ভালো এবং ব্রণের জন্যও উপকারি। ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, হাই গ্লিসামিক ফুড(চিপস, কেক, কুকিস, সিরিয়াল ইত্যাদি), চিনি ও গরুর দুধ খাওয়া বাদ দিতে হবে।