শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বেসামরিক বিমানে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধকরণে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুকরণ করার বৃটিশ সরকারের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি হলেন এভিয়েশন সিকিউরিটি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিনের সম্পাদক ফিলিপ বাম।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, যে ল্যাপটপে বিস্ফোরক (আইইডি) বহন করা হচ্ছে এই ২০১৭ সালে এসেও আমরা যদি তা চিহ্নিত করতে না পারি তাহলে বলতে হবে আমাদের স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভয়াবহ দুর্ভোগের মুখে পড়বেন। বিঘিœত হবে বিমান চলাচল। বিমানবন্দরগুলোতে দেখা দিতে পারে বিশৃংখলা। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম প্রধান দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে ইলেক্ট্রনিক পণ্য বহন নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই একই পথে অগ্রসর হয়েছে বৃটিশ সরকারও।
মঙ্গলবার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র সরকারি বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে তুরস্ক, লেবানন, জর্ডান, মিশর, তিউনিসিয়া ও সৌদি আরব থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যে যেসব ফ্লাইট যায় তার সবটাতে নতুন এই নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আওতায় বিমানে একটি মোবাইল ফোনের চেয়ে আকারে বড় কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বহন করা যাবে না। বিমানবন্দরে এ বিষয়টি চেক করা হবে।
এতে বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি ফিলিপ বাম। তিনি বলেছেন, যে মানুষগুলো বিমানে যাতায়াত করেন লাগেজে তাদের ল্যাপটপ ও অন্য সরঞ্জাম চেক করা উৎসাহিত করা খুবই কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ হবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে স্পষ্ট করেছে, এসব ডিভাইসের মাধ্যমে বোমা বা বিস্ফোরক বহন করে হামলা চালানো হতে পারে। এ জন্য এ নিষেধাজ্ঞা। এমন আশঙ্কার কথা নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। এক্ষেত্রে গত বছর সোমালিয়ার একটি আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে একই প্রক্রিয়ায় বোমা হামলার কথা তুলে ধরা হচ্ছে।
এর জবাবে ফিলিপ বাম বলেন, সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে জিবুতি যাচ্ছিল ডালো এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটটি। তাতে বোমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ল্যাপটপকে। কিন্তু নিরাপত্তা চেকআপের পরে তো ওই যাত্রীর কাছে ল্যাপটপটি তুলে দেয়া হয়েছিল। তাহলে কি চেকআপ করেছিল তারা! ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে নি এমন দুটি দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কো।
কিন্তু যুক্তরাজ্য কেন তাদেরকে এ তালিকার ভিতর এনেছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য বা কারণ বর্ণনা করা হয় নি।
উল্লেখ্য, যে বিমানবন্দরগুলোতে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে প্রতিদিন তা ব্যবহার করেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। তাদের চলাচলের সময় বাড়তি পরীক্ষা, চেকআপে অতিরিক্ত সময় লাগবে। এতে কাজের গতি স্লথ হয়ে পড়বে। এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে বহু মানুষ ট্রানজিট হিসেবে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরকে ব্যবহার করে থাকে। তারা টার্কিশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে নিয়মিত যাতায়াত করে হিথ্রো, গ্যাটউইক, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার ও এডিনবার্গে।
তবে তুরস্কে শুধু ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে এ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হবে।