শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: কোরিয়া উপদ্বীপে মার্কিন রণতরী মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, যে কোনো ধরনের মার্কিন আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য তাদের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ’র বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রণতরী মোতায়েনের এ আগ্রাসী পদক্ষেপের নেয়ায় যে কোনো ধ্বংসাত্মক পরিণতির জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো পর্যায়ের যুদ্ধের জন্য উত্তর কোরিয়া প্রস্তুত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সামরিক অনুশীলনকে কোরিয়া উপদ্বীপে আগ্রাসন বলেই বিবেচনা করে উত্তর কোরিয়া।
অপর খবরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এর সাবেক প্রধান স্যার জন সাওয়ারস বলেছেন, অনভিজ্ঞতা এবং কার্যকর প্রেসিডেন্টের মনোভাব না থাকার কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিপজ্জনক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারেন।
তিনি বিবিসি রেডিও-ফোরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ হলে তা সিরিয়ার চেয়েও বিশ্বের জন্য ভয়ানক হবে। সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো নিজেদের সামরিক এবং কুটনৈতিক অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিতে চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে এই আশঙ্কা কেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্যার জন সাওয়ারস বলেন, তিনি এমন কোনো ব্যক্তি নন যার প্রতি আমি আস্থা রাখতে পারে।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার পারমানবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে যখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন কোরীয় উপসাগরে রণতরী মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনাবাহিনীর নির্দেশে পাঠানো কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রæপ নামের ওই রণতরীতে রয়েছে একটি বিমানবাহী জাহাজসহ বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই বলেছেন, উত্তর কোরিয়ায় পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র এককভাবেই সিদ্ধান্ত নেবে। এর আগে মার্কিন প্যাসিফিক কমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রণতরীটি এখন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে কোরিয়া উপদ্বীপের দিকে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্ণযুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে রণতরীটি কোরিয়ার দিকে যাচ্ছে।
এক বিবৃতিতে প্যাসিফিক কমান্ড জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার ক্রমাগত দায়িত্বহীন পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে চলার মাধ্যমে যে ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলার জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
৫ এপ্রিল জাপান সাগরে আবারো একটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। এর আগে ৬ মার্চ উত্তর কোরিয়ার চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি অঞ্চল থেকে জাপান সাগরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
তখন দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্ভবত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখন্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। পারমাণবিক ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম চালানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এবং জাতিসংঘ বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ওই কার্যক্রম থেকে সরে আসেনি উত্তর কোরিয়া। বিবিসি, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।