বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৭

যুক্তরাজ্যের অস্ত্রবাজার চাঙ্গা করতেই উপসাগরীয় যুদ্ধ হয়েছিল

যুক্তরাজ্যের অস্ত্রবাজার চাঙ্গা করতেই উপসাগরীয় যুদ্ধ হয়েছিল

নিউজ ডেস্ক: ১৯৯০ সালে কুয়েতে ইরাকি অভিযানকে উপসাগরীয় দেশে অস্ত্র বিক্রির ‘দারুণ সুযোগ’ হিসেবে বিবেচনা করেছিল ব্রিটিশ সরকার। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের কিছু গোপন নথি জনসম্মুখে আসার পর এ কথা জানা গেছে। যুক্তরাজ্য সরকারের আর্কাইভ (ন্যাশনাল আর্কাইভস) থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত নথিগুলোর বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এই খবর জানিয়েছে।

ন্যাশনাল আর্কাইভের জনসম্মুখে আসা নথিগুলোতে দেখা যায় ১৯৯০ এর দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল যে দেশগুলো, সেসব দেশের মন্ত্রী আর সরকারি চাকরিজীবীরা ব্রিটেনের অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের জন্য বাজার নিশ্চিত করতে চাচ্ছিলেন। সে কারণে তারা চেয়েছিলেন, এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সামরিক সরঞ্জামের জন্য সৃষ্ট চাহিদার সুযোগ যেন ব্রিটিশ অস্ত্র প্রস্তুতকারকরা নিতে পারেন।

ওই নথিতে সেই সময়ের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী অ্যালান ক্লার্কের গোপন ব্রিফিং রয়েছে। যুদ্ধের প্রাক্কালে উপসাগরীয় দেশগুলো সফর করে এসে সেই ব্রিফিং করেছিলেন তিনি।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের ওইসব প্রচেষ্টার কারণে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছিল। ওই যুদ্দরাজ্য সরকারকে উপসাগরীয় অঞ্চলে অস্ত্র বিক্রির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল এবং আজ পর্যন্ত ওই অঞ্চলের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করেছিল।

১৯৯০ সালের ১৯ আগস্ট ‘সিক্রেট’ নামে লেখা একটি চিঠি জমা দিয়েছিলেন ক্লার্ক। ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের বাহিনী কুয়েতে আক্রমণ করার কয়েকদিন পর মার্গারেট থ্যাচারের কাছে ওই ব্যক্তিগত চিঠিটি জমা দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ক্লার্ক লিখেছেন, এ যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া আসবে তা ডিফেন্স এক্সপোর্ট সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন (এখন ডিএসও নামে পরিচিত) এর জন্য ‘দারুণ সুযোগ’ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

অন্য নথিগুলোতে দেখা গেছে, সেসময়কার কাতারের আমির ও বাহরাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে অস্ত্র রফতানি নিয়ে আলাপ করেছিলেন ক্লার্ক। আরও কিছু ব্রিফিংয়ে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিসর এবং জর্ডানকে সম্ভাব্য ব্রিটিশ অস্ত্রের ক্রেতা হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন। ক্যাম্পেইন এগেইন্সট আর্মস ট্রেডের গবেষক জো লো বলেছেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি রফতানির জন্য এখনও এ দেশগুলোকে টার্গেট করে থাকে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ সরকারের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা (ডিফেন্স এন্ড সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন) এর সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্য ৬শ কোটি পাউন্ড সমমূল্যের অস্ত্র চুক্তি করেছে; যা বিশ্বের অস্ত্রের বাজারের ৯ শতাংশ। এর অর্ধেক চুক্তিই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে করেছে যুক্তরাজ্য। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটেন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র বিক্রিকারী দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে দেশটি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024