শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: স্পেনের বার্সেলোনায় বিখ্যাত লা রাম্বলা-তে জনতার ভিড়ের মধ্যে একটি গাড়ির ধাক্কায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আরো শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো র্যাহয় বলেছেন, এই হামলার জন্য জিহাদিরা দায়ী।
পুলিশও মনে করছে এটা একটা ‘সন্ত্রাসী হামলা’। তবে এই হামলার উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। খবর বিবিসির।
এদিকে স্পেনের পুলিশ জানায়, তারা ক্যামব্রিলসে সম্ভাব্য দ্বিতীয় একটি হামলা ঠেকাতে পেরেছে এবং তাদের গুলিতে চারজন নিহত হয়েছে। লা-রাম্বলার পুরো এলাকাটি এখন ঘিরে রাখা হয়েছে। কাছাকাছি মেট্রো ও ট্রেন স্টেশনগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ক্যাটালান প্রদেশের প্রধান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার সাথে সম্পৃক্ত আছে এমন সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্পেনের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, গোলাগুলির সময় আরেক হামলাকারী নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এল মুন্ডো সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, শহরের উপকন্ঠে সেন্ট জুস ল্যাভার্ন-এ ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে।
এর আগে খবরে জানা যায়, দুজন সশস্ত্র ব্যক্তি কাছেই একটি রেস্তোরাঁতে ঢুকে পড়ে লোকদের জিম্মি করেছে। কিন্তু এমন খবর অস্বীকার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, গাড়িটি রাস্তার পাশে মানুষজনকে লক্ষ্য করেই হামলা চালিয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
স্পেনের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এটাও বলা হচ্ছে যে হামলার ঘটনার পর এক হামলাকারী পায়ে হেঁটে পালিয়ে এবং মানুষের ওপর হামলা চালানোর জন্য গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল বলে ধারাণা করা হচ্ছে। কারণ এর আগে গত বছর ইউরোপজুড়ে একই ধরনের হামলা হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো র্যাহয় টুইট করেছেন তাদের এখন অগ্রাধিকার হলো হামলায় আহতদের দিকে মনোযোগ দেয়া এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করা। স্পেনের বিরোধী দলগুলোর নেতারাও বলছেন এই হামলা অত্যন্ত বিচলিত করার মতো একটি ঘটনা।
এর মধ্যে পুলিশ দ্রিস ওবাকির নামে এক ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করেছে, ওই ব্যক্তিই গাড়িটি ভাড়া করে পথচারীদের ওপর তুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে মরক্কোতে জন্ম নেয়া ওই ব্যক্তির বয়স ২০ বছর। ইউরোপের শীর্ষ পর্যটন নগরীর অন্যতম বার্সেলোনায় এখন পর্যটকদের ভরা মৌসুম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা কী দেখেছেন
নিউ অরলিন্সের টম মার্কওয়েল, ট্যাক্সিতে করে যখন লা-রাম্বলায় পৌঁছালেন তখনই তিনি চিৎকার শুনতে পান।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমি অনেকের চিৎকার শুনতে পাই। মনে হচ্ছিল সিনেমার কোনো তারকাকে দেখে হয়তো তারা চিৎকার করছে।’
তিনি বলেন, তারপরই দেখি একটি ভ্যান। ভ্যানটি রাস্তার মাঝ বরাবর এগিয়ে যাচ্ছে। একবার ডানে যাচ্ছিল, আবার বামে। ভিড়ের মাঝখান দিয়ে দ্রুত যাচ্ছিল মানুষকে যতটা আঘাত করতে পারা যায় এমনভাবে যাচ্ছিল। মাটিতে অনেক মানুষ লুটিয়ে পড়েছিল।
আমের আনোয়ার নামে এক পর্যটক লা-রাম্বলায় হাঁটছিলেন, সে সময় পুরো রাস্তায় ছিল পর্যটকে ভরপুর। তিনি বলেন, হঠাৎ করে শুনলাম মানুষের আর্তনাদ এবং পুরো রাস্তা যেন দৌড়াতে শুরু করলো। রাস্তার মানুষ সবাই চিৎকার করে দৌড়াচ্ছিলো। আমার থেকে একটু দূরেই এক নারী তার সন্তানদের জন্য চিৎকার করছিলো।’