শরীর স্বাস্থ্য ডেস্ক: যারা মোটামুটি ত্বক চর্চা করেন, তাঁরা সকলেই একথা এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে ত্বকের যত্নের মূল পদ্ধতিই হল ক্লিঞ্জিং, এরপর টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং। তবে অনেকেই আছেন যারা ক্লিনজিং এবং ময়েশ্চারাইজিং-এর ব্যবহার জানলেও টোনারের ব্যবহার সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন।
কারণ অনেকের ধারণা, ক্লিনজিং মিল্ক বা ক্লিনজিং ক্রিম ব্যবহার করলেই ত্বকের সমস্ত নোংরা বের হয়ে যায়। আদতে তা সত্যি নয়। ক্লিনজিং-এর মাধ্যমে আমাদের ত্বকের সমস্ত ধুলো ময়লা পরিষ্কার হয় না। আর সেগুলি পরিষ্কার করতে আমাদের টোনারের সাহায্য নিতে হয়।
বিশেষ করে যাদের তৈলাক্ত ত্বক, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ত্বক পরিষ্কার করা খুবই জরুরি। কারণ তৈলাক্ত ত্বকে সবথেকে বেশি নোংরা জমা হয়, যা থেকে পরবর্তি সময় নানবিধ ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি হয়।
টোনার ব্যবহার করার ফলে ত্বকের রোমকূপগুলো উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং এর ফলে রোমকূপের ভিতরে আটকে থাকা ময়লা সহজে বেড়িয়ে যেতে পারে। টোনার ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উপরিভাগে সুরক্ষা কবচ তৈরি হয় এবং টোনিং-এর পর সঠিক ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক মোলায়েম হয়। তবে টোনার ব্যবহার করা মানেই বাজার চলতি ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো টোনার কিনতে হবে, এমন নয় কিন্তু! তাই বাড়িতেই কীভাবে টোনার বানাবেন?
১. আপেল সিডার ভিনিগার : এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনিগার মেশান এক কাপ পানি। এবার একটি তুলোর টুকরো ওই জলে ডুবিয়ে মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। এটি প্রতিদিন ব্যবহার করা যেতেই পারে। তৈলাক্ত ত্বকের চিকিৎসায় এই মিশ্রনটি খুবই ভাল একটি ঘরোয়া টোনার।
২. পুদিনা পাতা : একটি পাত্রে ছয় কাপ পানি ঢেলে ফুটে উঠতে দিন। এবার সেই পানির মধ্যে বেশ কয়েকটি পুদিনা পাতা ফেলে দিন। কিছু সময় পরে গ্যাসটা বন্ধ করে এই পুদিনা পানি ঠাণ্ডা হতে দিন। তারপর তুলোর বল এই মিশ্রনে ডুবিয়ে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
৩. লেবুর রস এবং পুদিনা পাতা : এই টোনারটি তৈরি করতে প্রয়োজন পরবে এক চামচ লেবুর রস, একটি পিপারমিন্ট টি ব্যাগ এবং এক কাপ গরম পানির। প্রথমে গরম পানির ভিতরে পিপারমিন্ট টি ব্যাগটি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর পিপারমিন্ট মিশ্রিত গরম পানিতে ভিতর এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। পানি ঠাণ্ডা হয়ে গেলেই ভাল করে সারা মুখে লাগিয়ে ফেলুন।
৪. অ্যালোভেরা : একটা অ্যালোভেরার টুকরো নিন। সেই টুকরোটি থেকে এবার একটি চামচের সাহায্যে জেল জাতীয় পদার্থটিকে বার করে এক কাপ পানির সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে নিন। যখন দেখবেন জেলটা ঠিক মতো পানিতে মিশে গেছে, তখন একটি তুলোর টুকরোর মাধ্যমে সারা মুখে ভালো করে সেই মিশ্রনটি লাগিয়ে ফেলুন।
৫. শসা : একটা শসা নিয়ে সেটিকে পাতলা করে কেটে নিন। এবার শশার এই টুকরোগুলোকে অল্প পানিতে ৮ মিনিট মতো ফুটিয়ে নিন। পানি অল্প ফুটতে শুরু করলেই গ্যাসটা বন্ধ করে দিন। এরপর পানি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পানি আর শসা একসঙ্গে বেঁটে নিন। এরপর পানি ছেঁকে নিন।এই পানিটিই হল আপনার টোনার। এবার তুলোর সাহায্যে সারা মুখে ভালো করে মেখে নিতে হবে।
৬. কর্পূর এবং গোলাপ জল : এক চিমটে কর্পূর, গোলাপ জলের সঙ্গে মেশান। এই মিশ্রণটি প্রতিদিন পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর ব্যবহার করুন। এটি সবথেকে সস্তা এবং উপকারী একটি টোনার।
৭. বরফ : পানি অল্প করে তুলো বরফ পানির মধ্যে ডুবিয়ে তা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। অথবা একটি বরফের টুকরো নিয়ে সারা মুখে ঘষে নিতে পারেন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুবই ভাল একটি ঘরোয়া টোনার।