শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৩

রাখাইন রাজ্যে গ্যাস ছড়িয়েই লাগিয়ে দেয়া হয় আগুন

রাখাইন রাজ্যে গ্যাস ছড়িয়েই লাগিয়ে দেয়া হয় আগুন

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগানোর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গ্যাস ছড়িয়ে দেয় রাখাইন রাজ্যের গ্রামগুলোয়। এর ফলে রোহিঙ্গাদের চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

এতে তারা ঘর থেকে বের হলেই ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় গ্রাম, এরপর দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে ঘরবাড়িতে। রবিবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা এসব তথ্য জানান।

রাখাইনের খুইন্যাপাড়া থেকে পালিয়ে আসা জোহরা বলেন, ভোর রাতে এলাকায় কী যেন ছিটিয়ে দেয়। চোখমুখ জ্বলতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পরই আমাদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমি বাচ্চা নিয়ে ঘরের বাইরে দৌড়ে আসি।

এরপর থেকে আমার স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে আসমা (৫) হারিয়েছে। তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। আমি মাছধরা নৌকায় করে দুই মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে চলে আসি। আসার সময় আমার কাছে কোনও টাকা ছিল না। তাই নাকফুল ও কানের দুল দেই।’

শাহপরীর দ্বীপের ভাঙা ঘাটে আশ্রয় নিয়েছেন সেতারা বেগম। তিনি এসেছেন গর্জনদিয়া থেকে। তার কোলে দুই বছরের শিশু। তিনি বলেন, চারদিকে আগুন আর আগুন। তাই নাফ নদীর দিকে দৌড়ে এসেছি। আমার স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছি না। আসার সময় কিছুই আনতে পারিনি।

সোমবার দিবাগত রাত ১ টার পর থেকে নাফ নদীতীরবর্তী মংডু এলাকা থেকে রোহিঙ্গারা আসা শুরু করে। মাছধরার ট্রলারে করে আসতে থাকে। রবিবার সকালেও তাদের আসতে দেখা গেছে। প্রথমে তারা আশ্রয় নেয় শাহপরীর দ্বীপের জেটি সংলগ্ন একটি চরে। সেখান থেকে উত্তরা পাড়ার ভাঙাঘাট পার হয়ে টেকনাফের দিকে আসে। নাফ নদীর তীরে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে আসতে দেখা গেছে।

রবিবার সকালে শাহপরীর দ্বীপে ৬০ বছরের বৃদ্ধ মো. নজির হোসেন আশ্রয় নেন। তার বাবার নাম মৃত কালা মিয়া। তিনি রাছিদং-এর রাজারবিল গ্রামে থাকতেন। তিনি বলেন, আজ সকালে আমাদের গ্রামে আগুন দিয়েছে। আগুনে পুরো গ্রাম পুড়ে গেছে।

জাহেদা বেগম (২৭) নামে এক নারী বলেন, ‘মংডুর নলবুনিয়ার এলাকায় থাকি। পৌরসভার পাশেই গুলি করে ২০০ মিলিটারি। আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করতেন। দুইটা থালা ও বাচ্চাদের কাপড় নিয়ে আমরা ঘর থেকে দৌড়ে বের হই।’

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের আরকান রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় সে দেশের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। এতে ১২ পুলিশ সদস্যসহ বহু রোহিঙ্গা হতাহত হয়। এ ঘটনায় রাখাইন রাজ্যে অভিযানের নামে হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুনসহ সাধারণ মানুষের ওপর নানা নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। এ কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের কথা বলা হলেও স্থানীয় সূত্রগুলোর ধারণা এই সংখ্যা আরও বেশি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024