শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের সবচেয়ে অবহেলিত রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবনের সামনে সিটজেন মুভমেন্টের আয়োজনে বিকাল ১ ঘটিকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কমিউনিটির শত শত নেতাকর্মী শ্লোগানের মাধ্যমে এলাকা প্রকম্পিত করে তুলে। সিটিজেন মুভমেন্টের আহ্বায়ক এম এ মালিকের সভাপতিত্বে ও সিটিজেন মুভমেন্টে নেতা সৈয়দ জামাল ও কামাল উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিলম্বে নির্যাতন বন্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ, সামরিক পদক্ষেপ সহ ঘটনার সুষ্ট বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের দাবী জানান।
এছাড়াও গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও অং সান সুচির আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার, অভিলম্বে নির্যাতন বন্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ, সামরিক পদক্ষেপসহ ঘটনার সুষ্ট বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের দাবী করেন ব্রিটিশ প্রধান মন্ত্রীর কাছে সিটিজেন মুভমেন্টের নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান করেন ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেন্টার ফোর সোসিয়াল ডেভোলাপমেন্টের চেয়ারম্যান মাহিদুর রহমান, সিটিজেন মুভমেন্টের সিনিয়র নেতা মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, মাওলানা অধ্যাপক আব্দুল কাদের সালেহ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ, সিটিজেন মুভমেন্টের সিনিয়র নেতা আতিকুর রহমান জিলু, ব্যারিস্টার আবু বক্কর মোল্লা, সৈয়দ মামনুন মোরশেদ, বিশিষ্ট কমিউনিটিনেতা আবুল কালাম আজাদ, আলহাজ্ব তৈমুছ আলী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ লেফটেনেন্ট কর্নেল (অব:) সৈয়দ আলী আহমেদ, সিটিজেন মুভমেন্টে নেতা আবেদ রাজা, খসরুজ্জামান খসরু, গোলাম রাব্বানি সোহেল, মহিলা নেত্রী ফেরদৌস রহমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তবে এম এ মালিক বলেন, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে আজ আমরা ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে সমবেত হয়েছি । সিটিজেন মুভমেন্টেসহ সারা বিশ্ব আজ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মোদি, অং সান সুচির শেখ হাসিনা মিলে আজ একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার অভিযানে নেমেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইসুকে পুজি করে নোবেল পুরুস্কারের প্রচার অভিযান চালাচ্ছে যা সুধু হাস্যকর নয় বরং তামাশার শামিল। কারণ শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করেছিল। পরে দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক চাপে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়। রোহিঙ্গারা মায়ানমারের নাগরিক শত শত বছর ধরে তারা সেখানে বাস করে আসছে ।
এম এ মালিক বলেন, অভিলম্বে তাদের পূর্ণনাগরিক অধিকার ফেরতসহ নিরাপদ আবাসনের বাবস্থার দাবী জানান। সেই সাথে গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক কমিশন গঠন করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও অং সান সুচির দাবী জানান। বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য তিনি উপস্থিত সকলকে সিটিজেন মুভমেন্টের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মাহিদুর রহমান মায়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মোসলমানদের উপর অং সান সুচি ও সামরিক জান্তা কর্তৃক যে অমানবিক নির্যাতন ও গণহত্যা চলেছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, রাখাইনের জনগণ আজ আন্তর্জাতিক চক্রের এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার । কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সেই ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ । সেখানকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিশ্ববাসীকে হতভম্ব করেছে।
তিনি রাখাইনের সমস্যা সমাধানে ব্রিটেনের শক্তিশালী পদক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, হাসিনা প্রশাসনের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারনে দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। বিক্ষোভ সমাবেশে আয়োজনের জন্য তিনি সিটিজেন মুভমেন্টের নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
মুফতি শাহ সদর উদ্দিন বলেন, ব্রিটেন মায়ানমারের বিষয়ে চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। ২০ লক্ষ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া। সেখানে একটি সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে কিন্তু মানবাধিকারের দাবীদার ব্রিটেন কিছুই করছে না । তিনি ব্রিটিশ সরকারকে দ্বৈতনীতি পরিহার করে অং সান সুচিকে ব্রিটেনে প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবী করেন। মায়ানমারের নির্যাতন ও গণহত্যায় অচিরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব কামনা করেন।
মাওলানা অধ্যাপক আব্দুল কাদের সালেহ বলেন, মায়ানমারে শিশু, মহিলা, যুবকদের গণহারে হত্যার মাধ্যমে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে । তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের পাশাপাশি সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সেই সাথে অং সান সুচি নোবেল পুরুস্কার প্রত্যাহারের দাবী জানান।
ব্যারিস্টার আবু বক্কর মোল্লা বলেন, অং সান সুচি ও তার সামরিক জান্তা মিলে মায়ানমারে যে জঘন্য হত্যাকান্ড চালাচ্ছে তা সারা বিশ্বে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই অভিলম্বে নিরাপত্তা পরিষদে রেজুলোশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্ট গঠন করে অং সান সুচি ও তার সামরিক জান্তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হউক। কারন অতীতে রোয়ান্ডা ও যুগোস্লাভিয়ায় ঘটিত অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্ট গঠিত হয়েছিল। তিনি ব্রিটেনকে মায়ানমার সরকারের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করার দাবী জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশ কমিউনিটি ও সিটিজেন মুভমেন্টের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তারু মিয়া, ডক্টর মুজিবুর রহমান, মোঃ তাজুল ইসলাম, কে আর জসিম, ব্যারিস্টার তমিজ উদ্দিন, বশির আহমেদ, আব্দুর রউফ, আব্দুল হাই, হেলাল উদ্দিন, মোঃ ফয়জুল হক, শামিম আহমেদ, ফেরদৌস রহমান, আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ, আনোয়ার আলী, ফখরুল ইসলাম বাদল, জিলান আহমেদ, হাজী এম সেলিম, এস এম লিটন, তোফাজ্জল হোসেন, শামিম আহমেদ, মোশাহিদ আলী তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, নাজমুল চৌধুরী, সেলিম আহমেদ, মোস্তাক আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, সেবুল মিয়া, মাওলানা শামিম, কামাল হোসাইন, মনোয়ার হোসেন, শাহিন মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেন, ব্যারিস্টার আবুল মনসুর শাহজাহান, এমাদুর রহমান এমাদ, আবুল হোসেন, আবু নাসের শেখ, তাজবির চৌধুরী শিমুল, এ জে লিমন, হাবিবুর রহমান, জুলফিকার আলী, খালেদ চৌধুরী, বকুল আহমেদ, শরীফ উদ্দিন ভুঁইয়া বাবু, আব্দুর রব, আব্দুল গাফফার, এমদাদ হোসেন খান, শহীদ মুসা, মুন্তাকিম আহমেদ, ডক্টর তওকির শাহ, আবু তাহের, মোঃ জিয়াউর রহমান, নজরুল ইসলাম মাসুক, আবুল কালাম আজাদ, ময়নুল ইসলাম, ডালিয়া বিনতে লাকুরিয়া, সৈয়দ আকবর, মিলাদ হসেন রুবেল, আব্দুর রহিম, মোঃ মহসিন আহমেদ, কামাল আহমেদ, আসমা জামান, এম এ তাহের, মিছবাহ উদ্দিন, লুতফুর রহমান, আরিফুল হক, হাসান জাহেদ, মো: রিয়াজুল হক, জামাল হোসেন, অঞ্জনা আলম, আব্দুল হক রাজ, আফজাল হোসেন, বাবর চৌধুরী, নুরুল আলী রিপন, সাদেক আহমেদ, সুমি আহমেদ, সাইফুল ইসলাম মিরাজ, ইমতিয়াজ এনাম তানিম, রেজয়ান আহমেদ, হুমায়ূন কবির, ফয়সল আহমেদ প্রমুখ ।