শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে অং সান সুচির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বৃটেনের বিরোধী লেবার দলনেতা জেরেমি করবিন। ব্রাইটনে দলের বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি মূল বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরবেন এবং সরাসরি সুচির প্রতি এ নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানাবেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে নৃশংসতা সংঘটিত হচ্ছে তাতে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ নৃশংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।
এ অবস্থার অবসানে জেরেমি করবিন দলীয় সভায় বলবেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চ্যাম্পিীয়ন অং সান সুচির প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করুন। রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি দিন জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে। রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন যাবত দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২৫ শে আগস্টের ঘটনার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নৃশংস অভিযান শুরু করে রোহিঙ্গাদের ওপরে। সে কথা এখন সাক্ষ্য দিচ্ছে জাতিসংঘ, বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন। প্রথম প্রায় দু’সপ্তাহ এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকার বা সেনাবাহিনীর তরফ থেকে কোনো জবাব না পাওয়া গেলেও পরে তারা মুখ খোলে এবং নৃশংসতার দায় চাপায় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিদের ওপরে।
উল্টো রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) দায়ী করে সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত অসংখ্য ছবি ও ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে, হাতে অস্ত্র নিয়ে কিভাবে সাধারণ রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হচ্ছে।
এরপরও এককভাবে সরকারের তরফ থেকে বা সেনাবাহিনীর তরফ থেকে একতরফাভাবে দায়ী করা হচ্ছে আরসা’কে, রোহিঙ্গাদেরকে। যারা যুগের পর যুগ নিজ দেশে বসবাস করছে নাগরিকত্বহীন। সেখানে সেনাবাহিনী যে নৃশংসতা চালাচ্ছে তার ওপর কোনো কর্তৃত্ব নেই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির। তিনি স্টেট কাউন্সিলর হলেও সংবিধান তাকে দৃশ্যত পঙ্গু করে রেখেছে।
ফলে তিনি এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা না বলায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার শিকারে পরিণত হচ্ছে। গত সপ্তাহে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন ফোন করেছিলেন অং সান সুচিকে। এ সময় তিনি তাকে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার আহ্বান জানান। ওদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধ করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন তেরেসা মে।