শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: রোববার জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচন। শনিবার প্রচারণা চালানোর শেষ দিনে পুরোদমে মাঠে রয়েছে বর্তমান জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের দল ও তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষণকারী সাইট @electionista এর জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, সিডিইউ পেতে পারে ৩৮.৬ শতাংশ, এসপিডি পেতে পারে ২৫.৮ শতাংশ এবং এফডিপি পেতে পারে ৬. ৪ শতাংশ ভোট।
ক্রিসটিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা মার্কেল শনিবার যখন স্ট্রালসুন্ডে বিশাল সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন তখন ফ্রাঙ্কফুর্টে নিজ দলের সমাবেশের যাচ্ছেন পিয়ার সোশ্যাল ডেমোক্রেটসের (এসডিপি) পিয়ার স্টাইনব্রুয়েক। শুক্রবার হ্যানোভারে সমাবেশে তার সরকারের গৃহীত নীতি বাস্তবায়ন করতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তাকে শাসন ক্ষমতায় রাখার জন্য ভোট চান তিনি।
তিনি সমবেতদের বলেন, দয়া করে রোববার সিডিইউকে ভোট দেবেন যাতে আমরা আপনার, আপনার শিশুর, আপনার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য আমাদের নীতি অব্যাহত রাখতে পারি। তিনি আরও বলেন, যাতে চার বছরে আমরা বলতে পারি যে ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে মানুষ ভালো রয়েছে, বেশি লোক কাজ পাবে; ইউরো অধিক স্থিতিশীল থাকবে, ইউরোপ আরও হবে এবং আমাদের ঋণের বোঝা কমে যাবে। এটাই আমার লক্ষ্য এবং এজন্যই আমি আপনাদের সমর্থন চাই।
ভিত্তিন বলেন, দুই দলই নির্বাচনী প্রচারণায় বলে বেড়াচ্ছে: ‘আমরা কর বাড়াবো না’। কিন্তু তিন শতাংশ ভ্যাট বাড়ার মাধ্যমে মরকেলের সরকারের শুরু হয়েছিল। মরকেল নেতৃত্বাধীন বর্তমান জোটের শরিক ফ্রি ডেমোক্রেটস (এফডিপি) স্টুটগার্টে সমাবেশ করেছে। ফ্রি ডেমোক্রেটসের জনপ্রিয় নেতা পররাষ্ট্র মন্ত্রী গুইডো ভেস্টারভিলের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এফডিপি।
মার্কেল যেন তৃতীয় জার্মানির শাসন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য জোরেসোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন স্টাইনব্রুয়েক। মার্কেলের প্রথম মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী স্টাইনব্রুয়েক উইসবাডেন, মারবুর্গ ও কাসেলে শুক্রবার সমাবেশ করেন। ওই সব সমাবেশে কড়া মরকেলের সমালোচনা করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, মার্কেল দেশের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো এড়িয়ে গেছেন।
স্টাইনব্রুয়েক সিরিয়া ইস্যুও তার বক্তব্যে আনেন। তিনি বলেন, জার্মানরা কোনো সামরিক হামলায় অংশ নিতে চায় না। তবে শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উড়িয়ে দেননি তিনি। নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী গ্রিন পার্টির নেতা ইয়ুর্গেন ফিত্তিন মার্কের ও স্টাইনব্রুয়েকের সমালোচনা করেন। জোট সরকার গঠনে তার দলও ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ক্রিসটিয়ান ডেমোক্রেটস বিপুল ভোটে জয় পাবে। কিন্তু তার নেতৃত্বাধীন বর্তমান জোট সরকারের শরিক ফ্রি ডেমোক্রেটস (এফডিপি) পার্লামেন্টের ৫ শতাংশের বেশি আসনে জয় পাবে না। আর যদি নির্বাচনের ফলাফল এমনই হয়, তাহলে মার্কেলকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্টাইনব্রুয়েকের সোশ্যাল ডেমোক্রেটসের সঙ্গে জোট বাধতে হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিডিইউ বা সিএসইউ-এর চেয়ে ঐতিহ্যগতভাবে এফডিপি অধিকতর উদার। অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে জোটের শরিকের দলটির সঙ্গে মতভেদ লক্ষণীয়। নির্বাচনে প্রত্যাশিতভাবে খারাপ করলে সিডিইউকে অন্য ছোট ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে হবে যার ফলে নড়বড়ে জোট সরকার গঠিত হবে।