শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রাসেলসে সোমবার সমঝোতা শুরু হচ্ছে। এতে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্রেক্সিট আলোচনার শুরুতে বল ঠেলে দেবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোটে। এরই মধ্যে এ আলোচনা নিয়ে তার নিজের সরকারই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে হাউজ অব কমন্সে ভাষণ দেবেন। সেখানে উভয় পক্ষকে ব্রেক্সিট সমঝোতায় নমনীয়তা প্রদর্শনের আহ্বান জানাবেন তিনি। ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, তিনি বলবেন সার্বভৌম যুক্তরাষ্ট্র ও শক্তিশাল, সফল ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে নতুন, গভীর ও বিশেষ সম্পর্ক রক্ষা করাই আমাদের আকাঙ্খা।
এটাই ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বন্ধুদের কাছে আমাদের চাওয়া। এমন অংশীদারিত্ব অর্জন করতে হবে নেতৃত্বের প্রয়োজন এবং নমনীয়তা প্রয়োজন। সেটা শুধু আমাদের পক্ষ থেকে হলেই হবে না।
একই সঙ্গে আমাদের বন্ধু ২৭ জানির সংগঠন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও দেখাতে হবে একই রকম মানসিকতা। তেরেসা মে বলবেন, আমারা ব্রেক্সিট নিয়ে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হচ্ছি।
এখন বল রয়েছে তাদের কোটে। আমি আশাবাদী, এক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাবো। উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনকে বের করে আনার জন্য দু’বছর সময় হাতে নিয়ে এরই মধ্যে ছয় মাস অতিক্রম করেছেন তেরেসা মে।
তবে এক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেসব নাগরিক বৃটেনে অবস্থান করেন এবং বৃটেনের যেসব নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকেন তাদের মর্যাদা কি হবে তা নিয়ে কার্যত এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
এরই এক পর্যায়ে গত মাসে ফ্লোরেন্সে ভাষণ দেন তেরেসা মে। সেখানে তিনি বৃটেনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ইউরোপীয় নাগরিকদের অধিকারের বিষয়টিতে নমনীয় হওয়ার কথা বলেন।
ওদিকে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাবের পক্ষেই অবস্থান নেয় পার্লামেন্ট। তাতে বলা হয়, ভবিষ্যত বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনা শুরুর মতো কোনো অগ্রগতি হয় নি।
এ সময়ে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে বৃটিশ সরকারের মধ্যেই বিভক্তির কড়া সমালোচনা করেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা। জুনের আগাম আগাম নির্বাচনে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন তেরেসা মে।
এরপর থেকে তিনি তার মন্ত্রীদের আয়ত্তে রাখতে এক রকম লড়াই করছেন। বিশেষ করে এক্ষেত্রে নাম করা যায় তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে। গত শুক্রবারে দলীয় এক সভায় ভাষণ দেন তেরেসা মে।
এ সময় তাকে প্রায় ৩০ জন এমপি ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছেন বলে তথ্য বেরিয়ে আসে। ওই অনুষ্ঠানে তিক্ত বক্তব্য রাখেন তেরেসা মে। এরপর থেকেই সরকারের ভিতরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
বরিস জনসন সহ তেরেসা মে মন্ত্রীসভায় রদবদল করতে যাচ্ছেন বলে সপ্তাহান্তে খবর রটে যায়। এতে বলা হয়, সিনিয়র অনেক মন্ত্রী পদ হারাতে পারেন। এরই মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা বিলম্বিত করার প্রস্তাব এনেছে।
সেই প্রস্তাবে সমর্থন করেছিলেন বলে কনজার্ভেটিভ দলের দু’জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন তেরেসা মে। তারা হলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তার দলের সদস্য জুলি গারলিং ও রিচার্ড অ্যাশওয়ার্থ।