শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির শক্তিশালী এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। যার আরও একটি পরিচয় তার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যা।
যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা শিশুদের পাসপোর্টে পিতামাতা যুক্ত করতে বৃটিশ পাসপোর্টে কিছু পরিবর্তনের দাবিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলছেন, পাসপোর্টে যদি পিতামাতা দু’জনেরই নাম থাকে তাহলে অনেক সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, গত পাঁচ বছরে এরকম ছ’লাখ নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বাচ্চার সাথে তাদের সম্পর্ক প্রমাণ করার জন্য। এজন্য অনেককেই, যাদের কাছে তখন বিয়ের কিম্বা জন্মের সার্টিফিকেট ছিল না, তাদেরকে সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। এরকম ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে কারণ অনেক নারীই এখন বিয়ের পর তাদের নামের পদবী বদলাতে চান না।
টিউলিপ বলেন, আমার মেয়ে দেখতে আমার চেয়ে একেবারেই আলাদা। সে তার বাবার মতো দেখতে। ইউকে বর্ডারের একজন তখন অনেকক্ষণ সময় নিয়ে আমার ও আমার মেয়ের পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখলেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, এই মেয়েটি কে?
এ রকম একটা প্রশ্নে আমি অবাক হই। তিনি তখন আবার জানতে চাইলেন। আমি বললাম, আমার মেয়ে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে আমাদের একই পদবী নেই কেন। তিনি তখন আমার বিয়ের ও জন্মের সার্টিফিকেটও দেখতে চাইলেন।
এই ঘটনার পর টিউলিপ সিদ্দিক হোম অফিসে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন বাচ্চাদের পাসপোর্টে পিতা ও মাতা দু’জনের নামই লিখে দেয়ার জন্যে, যাতে বিমানবন্দরে ও সীমান্ত পার হওয়ার সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়।
তিনি বলেন, আমি জানি না পদবী পরিবর্তন না করার জন্যে আমাকে কেন শাস্তি পেতে হবে। আমি ৩০ বছর বয়সে বিয়ে করেছি, আমার নিজের একটা জীবন আছে, আমার নিজের পদবীরও একটা মর্যাদা আছে।
টিউলিপ সিদ্দিক জানান, ছুটি কাটিয়ে তিনি যখন ফিরে আসছিলেন তখন তার সাথে ছিলেন স্বামী ক্রিস পার্সি এবং তাদের দেড় বছরের কন্যা আজালিয়া। ছোট্ট শিশু থাকার কারণে টিউলিপ সিদ্দিককে খুব দ্রুত পার হয়ে যাওয়া যায় এমন একটি লাইনে গিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়। কিন্তু ব্রিটেনে ফিরে আসার জন্য ইউরোস্টার ট্রেনে উঠার আগে ইউকে বর্ডার তাকে থামিয়ে দেয়।
সম্প্রতি তিনি তার মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে ফ্রান্সে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় যুক্তরাজ্যের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণকারী কর্মীরা তাকে ট্রেনে উঠতে দিচ্ছিলেন না। কারণ বাচ্চার নামের যে পদবী তার সাথে বাচ্চার নামের পদবীর মিল ছিল না। হোম অফিস বলছে, শিশু পাচার বন্ধ করার জন্য মা ও শিশুর পদবীতে মিল না থাকলে মায়েদেরকে এভাবে আটকে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এটা করা হয় শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উদ্দেশে।