শীর্ষবিন্দু নিউজ: সিলেটে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী প্রবাসীদের মিলনমেলা এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। শনিবার বিকেলে মাছিমপুরস্থ আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এই কনভেনশনের উদ্বোধন হয়।
কনভেনশনের জন্য খেলা বন্ধ রাখা হয়েছে কমপ্লেক্সের মাঠে। মাঠ ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। কিন্তু কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত ছিলেন ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা। আয়োজকরা মূল্যায়ন করেননি কমপ্লেক্সের নির্মাতা সিলেটের কৃতিসন্তান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকেও।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যথাযথ সম্মান না পেয়ে অভিমান করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। শেষ পর্যন্ত মান ভাঙিয়ে আরিফকে মঞ্চে তুলতে গলদঘর্ম হতে হয় সিলেট চেম্বার অব কমার্স এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স নেতৃবৃন্দকে।
আয়োজকদের এমন খামখেয়ালিপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। ক্ষুব্ধ হন অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে বসা সিলেটের বিশিষ্টজনেরাও। এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই আভাস মিলছিল বিশৃঙ্খলার। অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থাপক জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত বাজানো হয়নি জাতীয় সঙ্গীত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করানো হয়। কিন্তু বাইবেল, গীতা বা ত্রিপিটক পাঠ করানো থেকে বিরত থাকেন আয়োজকরা। এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশনের মতো এমন একটি অনুষ্ঠানে আয়োজকদের এমন কান্ড অনেকে সাম্প্রদায়িকতার সাথেও তুলনা করেছেন।
কনভেনশন শুরুর আগে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অন্যান্য অতিথির সাথে মঞ্চের সামনের চেয়ারে বসেন। অনুষ্ঠান শুরুর পর অন্যান্য অতিথিদের নাম ঘোষণা করে মঞ্চে তোলা হয়। কিন্তু আরিফের নাম ঘোষণার প্রটোকল অনুসরণ করেননি আয়োজকরা। এতে অপমানবোধ করেন আরিফ।
এক পর্যায়ে আরিফুল হক চৌধুরী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে উদ্যত হন। তখন ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এনাম আলী ও সিলেট চেম্বার নেতারা তাকে ঘিরে ধরেন। অনুনয়-বিনয় করে তাকে আবারো দর্শক সারির চেয়ারে বসান। এরপর তার নাম ঘোষণা করা হয় মঞ্চে আসনগ্রহণের জন্য। কিন্তু অভিমানী আরিফ তখনও আসন গ্রহণ করতে অসম্মতি জানান। মঞ্চে না ওঠে তিনি বসে থাকেন দর্শক সারিতে।
বেশ কয়েকবার মাইকে তার নাম ঘোষণা করে আসন গ্রহণের অনুরোধ জানানোর পর তিনি মঞ্চে ওঠেন। আরিফকে খুশি করতে অবশ্য পুরো অনুষ্ঠানে চেম্বার নেতৃবৃন্দ ও উপস্থাপিকা উর্মি মজহার তার গুণকীর্তণ করেন।
অবশ্য বক্তৃতার ক্ষেত্রে আবারো প্রটোকল ভাঙেন আয়োজকরা। মেয়র আরিফের বক্তৃতার পর অনেককে বক্তৃতার সুযোগ দেয়া হয়, যারা ওই সময় বক্তৃতা করার কথা নয়। বিষয়টি উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের কাছেও দৃষ্টিকটু লাগে।
আয়োজকদের এই স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান চলাকালে অনুষ্ঠাস্থল ত্যাগ করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বাফুফের সদস্য মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। এ ব্যাপারে মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, আয়োজকরা তাদের আচরণে স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের মধ্যে নূন্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ নেই। দুই চেম্বারের সভাপতি তাদের বক্তৃতায় একবারও অর্থমন্ত্রীর নাম নেননি। অনুষ্ঠানে ক্রীড়া সংস্থাও ছিল উপেক্ষিত। তাই আমি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে এসেছি।