শীর্ষবিন্দু নিউজ: প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল আজ শনিবার প্রকাশ হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় গণভবনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন।
২০১৭ সালের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হার কম হওয়ার কোনও ব্যাখ্যা নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের কাছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়িয়ে মন্ত্রী বলেন, ফলাফল ও জিপিএ-৫ গতবারের তুলনায় কম কেন, সে বিষয়ে এখনই ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়। ফল খারাপ হওয়ার কারণ জানতে আমরা কাজ করব। জাতি এর উত্তর জানতে পারবে।
এর আগে, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে জানা যায়, পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এবার ৯৫ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর ইবতেদায়ীতে পাস করেছে ৯২ দশমিক ৯৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী।
গত বছর প্রাথমিক সমাপনীতে ৯৮ দশমিক ৫১ শতাংশ ও ইবতেদায়ীতে ৯৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। গতবারের তুলনায় এ বছরে দুই পরীক্ষার ফলই খারাপ হয়েছে। এবার প্রাথমিকে জিপিএ ৫ পেয়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন, ইবতেদায়ীতে পাঁচ হাজার ২৩ জন শিক্ষার্থী।
আগের বছরের তুলনায় পাসের হার কম হলেও সার্বিক ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, আগের বছরের তুলনায় এবার ফল খারাপ হলেও সার্বিক ফলে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমরা চাই সব শিশু পাস করুক। আমরা আমাদের শিক্ষকদের সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি শিশুদের প্রতি তারা আরও যত্নবান হবেন।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের সূচনা করেছেন। ১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বই উৎসবের বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষকদের আন্দোলন বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের দাবির বিষয়গুলো সুরাহা করার চেষ্টা করছি। আন্দোলন নয়, আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয় সমাধান করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এ বছর ৩১ লাখ শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ীতে অংশ নেয়। যদিও প্রত্যেকটি পরীক্ষার পরই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে।
আগেই বলা হয়, সচিবালয়ে বেলা একটায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং বেলা দুইটায় শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন। দুই মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পরপরই সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এছাড়া যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করেও এ পরীক্ষার ফল জানা যাবে।
কিন্তু বেলা ৩টা বাজলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই জানতে পারছে না তাদের রেজাল্ট। এদিকে দুপুরের আগেই কাঙ্ক্ষিত রেজাল্টের অপেক্ষায় স্কুল প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ ফলাফল প্রকাশ না করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চোখ রাখছেন অনলাইনে। কিন্তু সেখানেও বিড়ম্বনা।
জানা গেছে, বেশিরভাগই শিক্ষার্থীই দুপুর ৩ টা পর্যন্ত তাদের ফলাফল জানতে পারেনি। তবে কিছু শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে রেজাল্ট জানতে পেরেছে। ফলাফল না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন বাকিশিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
শিশুসাহিত্যিক লেখক ও সাংবাদিক আপন অপু অভিযোগ করে বলেন, পিইসি রেজাল্ট ঘোষনার পর থেকেই অনেকবার আমার ছাত্রদের রেজাল্ট জানার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনভাবেই dperesults.teletalk.com.bd এবং dpe.gov.bd কোন সাইটেই ঢুকতে পারিনি। মোবাইলে ম্যাসেজ করেছি কিন্তু কোন রিপ্লে আসেনি। ছোট ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার রেজাল্ট পেতে যতি এত বিড়ম্বনা পোহাতে হয় তাহলে নিশ্চয় বোর্ড কতৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার প্রশ্ন চলে আসে।