গ্যালারী থেকে: পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যদিয়েই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন প্রক্রিয়া। আদালত অবমানার দায় এড়াতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি’র সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। সেই সঙ্গে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিসিবি’র নির্বাচনে তার প্যানেল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর নির্বাচনের সব কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও। বৃহস্পতিবারই জমা হয়েছে ৩৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। ১০ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বিসিবি’র ২০১৩ সালের নির্বাচন।
তবে নির্বাচন জমে ওঠা নির্ভর করছে কাল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও আপিল শুনানি শেষে সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে। ওই দিনই বোঝা যাবে শেষ পর্যন্ত কি হয়! এরই মধ্যে ক্যাটাগরি-১ (জেলা ও বিভাগ) থেকে ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। আর ৩ জন নির্বাচিত হলে এখান থেকে বের হয়ে আসবেন ১০ জন পরিচালক। আর ক্যাটিগরি-৩ (প্রতিষ্ঠান ও সাবেক ক্রিকেটার)-এর নির্বাচন জমিয়ে তুলতে পারেন সাবেক দুই অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও খালেদ মাহমুদ সুজন।
তবে বেশির ভাগ প্রতিপক্ষ নীরবে সরে গেছেন। আর কেউ কেউ লড়ছেন আইনি লড়াই। তবে শেষ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের কোন কিছু ধোপে টিকবে না বলেই মনে করেন নাজমুল হাসান সমর্থিতরা। ক্যাটাগরি-১ থেকে মোট ১০ জন পরিচালক আসার কথা। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে আকরাম খান ও আজম নাসির, বরিশাল থেকে আবু আউয়াল চৌধুরী বুলু, রংপুর থেকে এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, খুলনা থেকে শেখ সোহেল, যশোর থেকে কাজী এনাম আহম্মেদ ও সিলেট থেকে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এখন এই ক্যাটিগরিতে নির্বাচন জমিয়ে তুলেছেন ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কাউন্সিলররা। ঢাকা থেকে ২টি পদের জন্য মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪ জন। তারা হলেন- মানিকগঞ্জ থেকে নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মুন্সীগঞ্জ থেকে মঞ্জুর কাদের, টাঙ্গাইলের সানিয়াত খান বাপ্পা ও জামালপুরের মির্জা জিল্লুর রহমান। আর রাজশাহী থেকে ১টি পদে শাসমুল হুদা কিসলু ও রফিউর সামস প্যাডি ও সাইফুল আলম স্বপন লড়াই করবেন। ঢাকা বিভাগের ১৮ জন ভোটার ২ জনকে নির্বাচিত করবেন পরিচালক পদে। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে মোট ভোট ১০টি। তারা নির্বাচিত করবেন একজনকে।
ক্যাটাগরি-২ নির্বাচন হবে তো! বিসিবি’র নির্বাচনে মূল আকর্ষণ থাকবে ক্যাটিগরি-২ অর্থাৎ ক্লাব কোটা। বৃহস্পতিবার জমা পড়া ৩৮টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে এই ক্যাটিগরিতে ২১টি মনোনয়পত্র জমা হলেও নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এখানে নির্বাচন নির্ভর করছে সবার শেষে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া লুৎফুর রহমান বাদলের নির্বাচন করা, না করার উপর। তিনি ছাড়া সম্মিলিত পরিষদের বাইরে অন্য যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেয়ারই কথা।
জানা গেছে, এখান থেকে তিনজনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কথা। একটি সূত্রে জানা গেছে যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন তারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় পরিচালক হয়ে আসবেন। এছাড়াও এই ক্যাটাগরিতে আর যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন- ভিক্টোরিয়া ক্লাবের দুই কাউন্সিলর জহির আহমেদ ও মো. আজিজুর রহিম, কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাবের মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী ও প্রান্তিক ক্রীড়া চক্রের রাকিব হায়দার। ৭ তারিখ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন। তারপরই বোঝা যাবে ‘বি’-ক্যাটিগরিতে নির্বাচনের চালচিত্র।
এই ক্যাটিগরির ৪ তরুণ প্রার্থী প্রাইম ব্যাংকের তানজিল চৌধুরী, শেখ জামালের শওকত অজিজুল রাসেল, গাজী ট্যাংকের গোলাম মূর্তজা পাপ্পা ও র্যাপিড ফাউন্ডেশনের হানিফ ভূঁইয়া জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তারা সবাই একই সুরে বলেছেন, ‘আমরা তরুণ প্রজন্ম ক্রিকেটের জন্য কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে আসছি। আমরা চাই- বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন ধারায় অবদান রাখতে।’ এর মধ্যে হানিফ ভূঁইয়া বলেন, আমি এবারই নূতন। আগে পরিচালক ছিলাম না। কিন্তু ক্রিকেটের পাশে আছি অনেকদিন। আমি যদি জয়ী হয়ে আসতে পারি তাহলে আমার লক্ষ্য একটাই- ক্রিকেটের উন্নয়ন।
সম্মিলিত পরিষদের হয়ে ১২টি পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ১৫টি। তারা হলেন- গাজী গোলাম মূর্তজা পাপ্পা, তানজিল চৌধুরী, শওকত আজিজ রাসেল, নাজিব আহমেদ, নাজমুল হাসান পাপন, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, মাহবুব-উল আনাম, নাজমুল করিম টিংকু, মুহাম্মদ ইসমাইল হায়দার মল্লিক, আফজাল-উর-রহমান সিনহা, এনায়েত হোসেন সিরাজ, আহমেদ ইকবাল হাসান, মো. হানিফ ভূঁইয়া, জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি।