ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে দাবি করেছেন, এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই ইরান পরমাণু বোমা নির্মাণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। এ জন্য তিনি ইরানকে একটি ‘চূড়ান্ত সীমা’ (রেডলাইন) বেঁধে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের জবাবে অধিবেশনে যোগ দেয়া ইরানি প্রতিনিধিদল বলেছে, আক্রান্ত হলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে। তারা ইরানের বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্ভট অভিযোগ’ তোলার জন্য নেতানিয়াহুকে অভিযুক্ত করেন।
ভাষণ দেয়ার সময় নেতানিয়াহু পরমাণু বোমার নকশা আঁকা একটি ড্রইং উঁচিয়ে ধরে তাতে একটি লাল রেখা টেনে দেন। ইসরাইলের আহ্বান সত্ত্বেও ইরানের পরমাণু প্রকল্পের জন্য কোনো ‘চূড়ান্ত সীমা’ নির্ধারণে অস্বীকৃতি জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এবার তিনি জাতিসঙ্ঘে একই প্রসঙ্গ তুললেন। ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদপে নেয়ার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবার সাথেও বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন নেতানিয়াহু।
অবশ্য জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে তিনি আভাস দিয়েছেন, আগামী ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইরানে হামলা চালানোর কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই। নেতানিয়াহুর দেখানো বোমার নকশায় কয়েকটি দাগ দিয়ে প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ ও চূড়ান্ত ধাপ নির্দেশ করা ছিল। চূড়ান্ত ধাপের ওপরে একটি ফিউজও আঁকা ছিল। ভাষণের মধ্যেই নেতানিয়াহু চূড়ান্ত ধাপের নিচে একটি লাল রেখা এঁকে দেন। ‘চূড়ান্ত ধাপ’ দিয়ে ওই ছবিতে বোমা বানানোর মতো প্রয়োজনীয় উপাদানের ৯০ শতাংশ জড়ো করার সমতা বুঝানো হয়েছে। ‘আর এ সুযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি থেকে ইরানকে পুরোপুরি সরিয়ে আনার জন্য প্রভাবিত করতে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে,’ বলেন তিনি।
ইরানের পরমাণু প্রকল্পের যেকোনো পর্যায়ে ইসরাইল তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে, নেতানিয়াহুর বক্তব্যের মাধ্যমে সে বিষয়ে একটি পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ইসরাইলের এই হামলার বিষয়টি যেকোনো সময় অন্য দিকে মোড় নিতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন নেতানিয়াহু।
Leave a Reply