শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ব্রিটিশ এমপিদের অবমাননার দায়ে দেশটির একজন অ্যাক্টিভিস্টের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বাতিল করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের এই সংগঠকের নাম জেমস গোডার্ড।
তার সংগঠন থেকে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থক বিক্ষোভকারীদের প্রতি হয়রানিমূলক বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট দেওয়া হচ্ছিল। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের রাশ টেনে ধরতে পুলিশের উদ্যোগী হওয়ার মধ্যেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়ার খবর এলো।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জেমস গোডার্ড-এর আইডি ডিলিটের অল্প সময়ের মধ্যেই মঙ্গলবার বিকালে একই রকমের পদক্ষেপ নেয় আন্তর্জাতিক ই-কমার্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পেপ্যাল।
এর আগে সোমবার যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী এমপি অ্যানা সবরি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়ে ফেরার পথে তার পিছু নেয় ব্রিটিশ ইয়েলো ভেস্ট সমর্থকরা। এক পর্যায়ে তারা তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করে। পরে এ ইস্যুতে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রধানকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন স্পিকার জন বার্কো।
জেমস গোডার্ড নামের এই অ্যাক্টিভিস্ট নিজেদের ফ্রান্সের ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। মানুষের নজর কাড়তে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত লাইভে এসে তিনি আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতেন।
মঙ্গলবার থেকে ফেসবুকে ঢুকতে পারছেন না এই অ্যাক্টিভিস্ট। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি বলছে, তারা ফেসবুকে কোনও ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সহ্য করবে না। কেননা, এটি ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি করে এবং বিশ্বজুড়ে সহিংসতার উসকানি দেয়।
একটি পেপ্যাল পেজের মাধ্যমে লোকজনকে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানাতেন তিনি। সেটিও বন্ধ করে দিয়েছে পেপ্যাল কর্তৃপক্ষ।
ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ এলাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী এমপি অ্যানা সবরি’কে হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। তার প্রতি যৌন ও বর্ণবাদী বক্তব্য ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও সংগঠনটির বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এ ইস্যুতে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ক্রেসিদা ডিকের কাছে চিঠি লিখেছেন স্পিকার জন বার্কো। চিঠিতে তিনি তাকে পার্লামেন্ট ভবনের বিপরীতে কলেজ গ্রিন এলাকায় এমপি ও সাংবাদিকদের প্রতি আক্রমণাত্মক, হুমকিস্বরূপ এবং ভয়ঙ্কর আচরণের ঘটনাগুলো জরুরিভাবে দেখার আহ্বান জানান।
অন্তত ১১৫ জন এমপি বাড়তি সুরক্ষার জন্য পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। জন বার্কো লিখেছেন, এখানে এমন একটি প্যাটার্ন রয়েছে যেখানে হৃষ্টপুষ্ট শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের নিয়মিত গোষ্ঠী রয়েছে। তারা কার্যকরভাবে তাদের অপছন্দের সম্প্রদায়ের সদস্যদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে এবং তাদের নিন্দা করে। বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যরা এর শিকার হন।
মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সেও এ ইস্যুতে কথা বলেন স্পিকার জন বার্কো। তিনি বলেন, দৃশ্যত কালো এবং জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী থেকে নারী ও লোকজনকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। আসুন আমরা খোলামেলাভাবে এটা বলি যে, এটি ফ্যাসিবাদের একটি ধরন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেনডেন্ট।