শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বিরোধী দল লেবার পার্টির আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট পেয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সরকার। বুধবারের ভোটাভুটিতে থেরেসার প্রতি আস্থা রেখেছেন ৩২৫ জন এমপি আর অনাস্থা জানিয়েছেন ৩০৬ জন।
এর প্রেক্ষিতে ১৯ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন থেরেসা মে। ফলে টিকে গেলো কনজারভেটিভ সরকার। ভোটে জিতেই থেরেসা জানিয়েছেন তিনি আগামী সোমবার ব্রেক্সিট নিয়ে তার বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন।
মে বলেন, তার সরকার জনগণকে একটি ব্রেক্সিট দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জনগনের ম্যান্ডেটকে শ্রদ্ধা করেন। এবং জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতেই তারা নির্দিষ্ট সময়ে ইউরোপ থেকে বের হয়ে যাবেন।
তিনি ব্রেক্সিটকে সামনে রখে সকল দলের নেতাদের তার সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, আমাদের এমন সমাধান বের করতে হবে যা সকল প্রক্ষর কাছেই গ্রহণযোগ্য এবং হাউজের যথেষ্ট সমর্থনযোগ্য।
বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, যে কোন আলোচনার আগে প্রধানমন্ত্রী থেরেসাকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের যে কোনো সম্ভাবনা বাতিল করতে হবে।
যেসব ‘বিদ্রোহী’ কনজারভেটিভ এবং ডিইউপি’র এমপিরা মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে থেরেসার বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তার রেকর্ড পরাজয়ের জন্ম দিয়েছিলেন, তারা তার সরকারের পক্ষেই ভোট দেয়ায় সরকার টিকে যায়।
এর আগে পার্লামেন্ট বিতর্কে বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন থেরেসার সরকারকে গোঁয়ার’ আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এই সরকার সবার আস্থা হারিয়েছে।
তাদের আর ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। তিনি মনে করেন, থেরেসা মে প্রশাসন অকার্যকর এবং সরকার পরিচালনা করতে ব্যর্থ। এই মুহূর্তে তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত হবে পদত্যাগ করা। এসময় হাউজ অব কমন্সে ৬ ঘণ্টা ধরে বিতর্ক চলে।
এর আগে মঙ্গলবার ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নাটকীয় ভোটাভুটিতে শেষ পর্যন্ত হেরে যান থেরেসা মে। চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেন ৪৩২ জন আর পক্ষে ভোট দেন মাত্র ২০২ জন।
ভোটে জিততে থেরেসার প্রয়োজন ছিলো ৩২০টি ভোট। ফলশ্রুতিতে ২৩০ ভোটের সুবিশাল ব্যবধানে হেরে যান থেরেসা। এটি ১৯২০ সালের পর ব্রিটিশ সরকারে থাকা কোন দল বা প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় পরাজয়।
ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরপরই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ঘোষণা দেন পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিন। করবিন বলেন, ১৯২০ সালের পর পার্লামেন্টে কোনো সরকার এত বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়নি। এই পরাজয় কলঙ্কিত এবং লজ্জাজনক।
তবে ব্রেক্সিট কেন্দ্রিক এতো নাটকীয়তার পরেও ব্রেক্সিট কোন চুক্তি মোতাবেক হবে কিনা সে বিষয়ে ধোঁয়াসা কাটেনি। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেরেসার চুক্তিকে প্রত্যাখান করায়, আপাতত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সোজা পথে কোনো চুক্তি হচ্ছে না।
এদিকে কোন চুক্তি হোক আর নাই হোক আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে সয়ংক্রিয়ভাবে বের হয়ে যাবে যুক্তরাজ্য।