শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: সদ্য ব্রিটিশ নাগরিকত্ত্ব হারানো আইএস বধূ বলে পরিচিতি পাওয়া শামীমা বেগম একটি জলন্ত ইসূতে পরিনত হয়েছেন।
আর তাই এবার ব্রিটেনের একটি শ্যুটিং রেঞ্জের অনুশীলনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমের পোস্টার ব্যবহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্কুলে পড়ার সময়ে লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দিয়েছিলেন শামীমা বেগম।
উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ওয়েলসের এলাকার আল্টিমেট এয়ারসফর রেঞ্জ জানিয়েছে, নতুন অফার হিসেবে ক্রেতাদের শামীমা বেগমের মুখের ছবি দিয়ে বানানো পোস্টার দেওয়া হচ্ছে। চাহিদার ওপরে নির্ভর করে তা সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন বয়স সীমার মানুষদের কাছে পিস্তল ও রাইফেল ভাড়া দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
তবে জীবিত মানুষকে টার্গেট অনুশীলনে ব্যবহার করায় কোম্পানিটি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের বেথনেল গ্রিন থেকে অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে পালিয়ে সিরিয়ায় চলে যান শামীমা বেগম। সম্প্রতি সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে গর্ভবতী অবস্থায় তাকে খুঁজে পান এক ব্রিটিশ সাংবাদিক। সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী খবরের শিরোনাম হন তিনি।
তবে সম্প্রতি তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। বাবামায়ের জন্মসূত্রের দিকে ইঙ্গিত করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন শামীমা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবেন। তবে ঢাকার তরফে নিশ্চিত করা হয় বাংলাদেশে প্রবেশের কোনও অনুমতি চাননি শামীমা। এবারে যুক্তরাজ্যের শ্যুটিং রেঞ্জে শামীমার ছবি টার্গেট হিসেবে ব্যবহারের খবর জানা গেল।
ওয়ালেস এলাকা থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করা লেবার পার্টির এমপি অ্যাঞ্জেলা ইয়াগল বলেছেন, ‘তারা জীবিত মানুষকে টার্গেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। বিশেষ করে যখন ছয় বছর বয়সী শিশুও সেই খেলায় অংশ নিতে পারে।’
তবে আল্টিমেট এয়ারসফর রেঞ্জ বলছে, তারা বহুল পরিচিত অন্য ব্যক্তিদের ছবিও টার্গেট হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে তারা ডোনাল্ড ট্রাম্প, অ্যাডলফ হিটলার ও ওসামা বিন লাদেনের নামও সামনে এনেছে।
আল্টিমেট এয়ারসফর রেঞ্জ সন্ত্রাসবাদ এবং এর সঙ্গে জড়িত কাউকে উপেক্ষা করতে পারে না দাবি করে কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেছেন, আমরা যেসব টার্গেট দেই সবসময়ে তা আমাদের ব্যক্তিগত মতামত প্রতিফলিত করে না।
ওই মুখপাত্র বলেন, সাক্ষাৎকার দেওয়া শামীমা বেগমের ফুটেজ দেখার পর এবং তার অনুশোচনার অভাব দেখে আমরা তাকে টার্গেট অনুশীলনে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেই। কোম্পানিটির দাবি রেকড সংখ্যক ক্রেতারা শামীমা বেগমকে টার্গেট হিসেবে চাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে সমাজে ঘৃণা এবং মুসলমানদের বিশেষ করে মুসলমান নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সমাজে এটা গভীর উদ্বেগের বিষয় যে মানুষ শিশুদের উপস্থিতিতে জীবিত মানুষকে শ্যুটিং টার্গেট হিসেবে ব্যবহারের অনুরোধ করছে।