শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছেদের পর (ব্রেক্সিট) মুক্তবাণিজ্য সুবিধা হারাবে যুক্তরাজ্য। ব্রেক্সিট–পরবর্তী এ অর্থনৈতিক হতাশায় ব্রিটেনের পাশে দাঁড়ানোর তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইইউভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মতো যুক্তরাজ্যকেও মুক্তবাণিজ্যের স্বাদ দিতে খসড়া প্রক্রিয়া এরই মধ্যে দাঁড় করিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ব্রিটেনকে হুশিয়ারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রশাসন ১৮ পৃষ্ঠার খসড়া বাণিজ্য চুক্তি প্রস্তুত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা, ব্রেক্সিট–পরবর্তী এটাই হবে বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্য চুক্তি।
যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য নীতি প্রকল্পের পরিচালক ডেভিড হেনিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটি একটি আপসহীন চুক্তি, যেখানে পরস্পরের লাভের উল্লেখ নেই। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ফায়দা তুলতে চায় না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, খুব, খুবই বড় চুক্তি। দ্রুতই এটি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। ব্রিটেনের চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির কৃষিপণ্যে অবাধ প্রবেশের অধিকার পেতে চায়। বিনিময়ে ব্রিটিশ পণ্যে শুল্কহ্রাস করবে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া মার্কিন পণ্য রফতানিতে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতাও দূর করতে চায় ওয়াশিংটন। এ চুক্তির মাধ্যমে প্রাণী খাদ্য, ক্লোরিনমুক্ত মুরগির পণ্য ও জিন প্রযুক্তিতে শোধিত পণ্য সুবিধা পাবে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মাথাব্যথার কারণ হল, বিচ্ছেদের পরও ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে চায় যুক্তরাজ্য। তবে ইউরোপ এতে কতটা সাড়া দেবে, তা সময়ের ওপরই নির্ভর করছে। ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যকে ইইউ ছাড়ার সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন সরকারকে তার দেশে উৎপাদিত কৃষি ও খামারজাত পণ্যের ওপর থেকে ‘দ্রুত’ সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার এক টুইটে ট্রাম্প এ আহ্বান জানান।
তিনি লেখেন, আমি চীনকে দ্রুত আমাদের কৃষিজাত পণ্যের (গরু এবং শূকরের মাংসও অন্তর্ভুক্ত) ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছি।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশ গত বছর পরস্পরের পণ্যের ওপর কয়েক দফা শুল্কারোপ করে যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছিল, তার আঁচ সারা বিশ্বেই লেগেছে। নিজেদের অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে উভয় দেশেই এখন ওই যুদ্ধ থেকে সরে আসতে চাইছে। যার অংশ হিসেবে ডিসেম্বরে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়।
কৃষিপণ্য থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের কারণ ব্যাখ্যায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এ আহ্বান জানিয়েছি, কারণ আমাদের বাণিজ্য আলোচনা দারুণ অগ্রসর হচ্ছে।’ বাণিজ্য আলোচনার জন্যই ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত নতুন শুল্ক কার্যকরের সময় ১ মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববাণিজ্য নীতির কঠোর সমালোচক ট্রাম্প শুরু থেকেই তা পরিবর্তনের কথা বলে আসছেন।
‘চীন অন্যায় সুবিধা পাচ্ছে’ দাবি করে তিনি চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে আড়াই শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার শুল্কারোপের ঘোষণা দেন। জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর নতুন করে আরও ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার শুল্কারোপের ঘোষণা দেয়।