শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করায় ব্রিটিশ এমপি রূপা হককে বাংলাদেশে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সন্দেহজনক এক ইমেইল বার্তায়।
যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির সংসদ সদস্য রূপা হক প্রধানমন্ত্রী মের ব্রেক্সিট চুক্তির বিরোধিতা করে আরেকটি গণভোটের আয়োজনের দাবিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট ইমেইল বার্তায় তার এই অবস্থানের সমালোচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামের একাংশ ‘জন’ হয়ে থাকতে পারে।
সোমবার (৪ মার্চ) রূপা হক ইমেইলটি পান। এতে লেখা হয়েছে, ‘ব্রেক্সিট নিয়ে যদি খুব সম্প্রতি সুমতি না হয়ে থাকে, তাহলে আপনার উচিত হবে নিজের জীবন ধ্বংসের জন্য বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া।’ ইমেইলে রূপা হককে রূঢ় ভাষায় ইইউয়ের পক্ষাবলম্বী আখ্যা দিয়ে নিন্দা করা হয়েছে।
ইমেইল লেখকের দাবি, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা আসলেই ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাতে চায় কি না তা নির্ধারণে রূপা হক যে দ্বিতীয় গণভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তা বন্ধ করতে হবে।
ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে রূপা হকের অবস্থানকে ইমেইলের প্রেরক ‘অগণতান্ত্রিক প্রচারণা’ আখ্যা দিয়ে আরও দাবি করেছে, রূপা হকের উচিত, হয় কনজারভেটিভ সরকারের ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থন দেওয়া, আর না হয় ‘নো ডিল’ ব্রেক্সিটের বিরোধিতা বন্ধ করা।
ইমেইল বার্তার ভাষ্য, ‘যদি দ্বিতীয় অবস্থানটি বেছে নেন, তাহলে আপনি যা যা চুক্তিতে চান তা নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাবেন। কিন্তু তা যদি না হয়, তাহলে গৃহযুদ্ধ হবে। আর তাতে আপনার মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যদি বেঁচে থাকেন, তাহলে আপনি ও আপনার মতো ব্রেক্সিট বিরোধীরাই সেই পরিস্থিতির জন্য দায়ি থাকবেন।’
ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের কঠোর সমালোচক রূপা হক। তিনি ওই ইমেইল বার্তার ভাষ্য প্রকাশ করে দিয়েছেন টুইটারে।
সেখানে তিনি নিজের যুক্তরাজ্যের নাগরিক হওয়ার কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ছুটি কাটাতে কয়েকবার তার বাংলাদেশে যাওয়া হয়েছে বটে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের পর্যটনকেন্দ্র ইজেল অব ম্যানে যতবার তিনি ছুটি কাটাতে গিয়েছেন, বাংলাদেশে গেছেন তার চেয়ে কম সংখ্যকবার।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হক লন্ডনের ইয়েলিং সেন্ট্রাল ও অ্যাক্টন আসনের নির্বাচিত এমপি। ব্রেক্সিট সমর্থন করতে না পারলে বাংলাদেশে চলে যাওয়া উচিত, উল্লেখ করে পাঠানো ইমেইল বার্তার জবাবে রূপা হক লিখেছেন, ব্রেক্সিটের বিষয়ে দ্বিতীয় একটি গণভোট আয়োজনের দাবি থেকে তিনি সরবেন না।
তার ভাষ্য, ‘ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে থেরেসা মের প্রস্তুত করা চুক্তিতে আমি সমর্থন দেবো না। একই সঙ্গে ইজেল অব ম্যানের চেয়েও কম সংখ্যকবার যেখানে বেড়াতে গিয়েছি, সেখানে ফিরে যাওয়ার পরামর্শও আমি গ্রহণ করব না।
২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রের যাত্রা শেষ হয়ে যায়নি। সাধারণ মানুষ ব্রেক্সিটের বিষয়ে যাতে তাদের চূড়ান্ত মতামত জানাতে পারে তা নিশ্চিতে আরেকটি জনরায় গ্রহণের দাবি জানিয়ে যাব।’