শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩০

মারা গেছে শামীমার নবজাতক সন্তান জেরাহ

মারা গেছে শামীমার নবজাতক সন্তান জেরাহ

শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ: বহুল আলোচিত আইএস ব্রাইড বলে পরিচিত শামীমা বেগমের শিশু সন্তানটি মারা গেছে। সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেয়ার তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে ছিল ওই শিশুটি।

এরপর নিউমোনিয়ায় বৃহস্পতিবার মারা গেছে সে। সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর এক মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

বৃটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যেকোন শিশুর মৃত্যু তার পরিবারের কাছে বেদনাদায়ক ও গভীর হতাশার।

এসডিএফের ওই মুখপাত্র বলেছেন, শামীমা তার ছেলেটির নাম রেখেছিলেন জেরাহ। মেডিকেল সার্টিফিকেট অনুযায়ী সে মারা গেছে নিউমোনিয়ায়। এই শিশুটি জন্ম নেয়ার আগে শামীমা বৃটেনে ফিরতে চান। তার সন্তানের উন্নত ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য এমন আবেদন জানান বৃটিশ সরকারের কাছে।

কিন্তু বৃটেন দৃশ্যত এ নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেউ তার প্রতি ও তার সন্তানের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। কেউ এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। তার মধ্যে শামীমার বৃটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। এর বিরুদ্ধে আপীল করেন শামীমা। ওদিকে বাংলাদেশী পিতামাতার ঘরে জন্ম নেয়া শামীমাকে বাংলাদেশে পাঠানোর সম্ভাব্যতা আলোচনায় উঠে আসে।

বলা হয়, শামীমার পিতামাতা বাংলাদেশী হওয়ায় তিনি দ্বৈত নাগরিক। বৃটেনে তার নাগরিকত্ব বাতিল হলে তিনি তার পিতামাতার দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে শামীমা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি কখনো বাংলাদেশে আসেন নি। তার কাছে বাংলাদেশী কোনো পাসপোর্ট কখনো ছিল না। এ নিয়ে বৃটেন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে চিঠি চালাচালি হয়। বাংলাদেশ শামীমাকে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।

বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের অধিবাসী আহমেদ আলী। তিনি বহু আগে বৃটেনে পাড়ি জমিয়েছেন। তার কন্যা শামীমা। তিনি আরো দুই বান্ধবী খাদিজা ও আমিরা আবাসের সঙ্গে ২০১৫ সালে বৃটেন থেকে পালিয়ে চলে যান সিরিয়ায়। উদ্দেশ্য আইএসের যুদ্ধে অংশ নেয়া। তুরস্ক হয়ে সেখানে যাওয়ার পর তিনি বিয়ে করেন ডাচ নাগরিক ও আইএস যোদ্ধা ইয়াগো রিয়েদিজককে। জেরাহর আগে শামীমা দুটি সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু তারা মারা গেছে। শেষে ফেব্রুয়ারিতে তিনি তৃতীয় সন্তান জেরাহকে জন্ম দেন। এই সন্তানটি জন্ম  নেয়ার আগেই তিনি বৃটেনে ফেরার আকুতি জানান। কিন্তু তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় বৃটেন। বৃটিশ সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই জন্ম হয় জেরাহর। ফলে বৃটিশ আইন অনুযায়ী শামীমার এই সন্তানটি বৃটিশ নাগরিক।

শামীমা বর্তমানে যে শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন সেখানে কাজ করছেন একজন প্যারামেডিক। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, শামীমার সন্তান জেরাহ শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে একজন ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়। সেখান থেকে তার মা শামীমা সহ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি হাসপাতালে। কিন্তু ওইদিনই স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে মারা যায় জেরাহ। তাকে দাফন করা হয়েছে শুক্রবার। এরপর ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন শামীমা।

এ বিষয়ে বিবিসির কাছে বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, দুঃখজনক। সম্ভবত অনেক শিশু, যারা এসব যুদ্ধক্ষেত্রে জন্ম নিচ্ছে, তারা অবশ্যই নিরপরাধ। এসব শিশুকে এমন পরিণতিতে টেনে নেয়া হয়েছে এ জন্য ওই শিশুদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো ছাড়া কিছু করার নেই।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024