শরীর স্বাস্থ্য ডেস্ক: গরমে প্রাণ যায় যায়। অতিরিক্ত ঘামে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। এ সময় প্রয়োজন পড়ে বেশি পরিমাণে পানির। গরমে পানীয় হিসেবে তরমুজ বা এর জুস বেশ কার্যকরী।
অনেকে মনে করেন, তরমুজে শর্করা আর পানি ছাড়া কিছু নেই। তাদের এ ধারণা ভুল। তরমুজে পানি, শর্করার পাশাপাশি আছে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। তরমুজে ক্যালরি খুব কম থাকে। তাই বেশি পরিমাণে খেতেও সমস্যা নেই। নেই মুটিয়ে যাওয়ার ভয়। এক কাপ বা ১৫২ গ্রাম তরমুজে ৪৩ ক্যালরি, ১১ গ্রাম সোডিয়াম, ১১ গ্রাম কার্বো হাইড্রেট, ১ গ্রাম ফাইবার থাকে, কিন্তু কোনো ফ্যাট থাকে না। এক কাপ তরমুজ দিনে শতকরা ২৩ ভাগ ভিটামিন এ, ২১ ভাগ ভিটামিন সি’র চাহিদা পুরণ করে।
এ ছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, জিঙ্ক, আয়রন ইত্যাদি। আছে লাইকোপেন, যা বিভিন্ন কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পানির চাহিদা পূরণে আছে তরমুজের ৯২ ভাগই পানি। গরমে পানির চাহিদা পূরণে তরমুজ বেশ কার্যকর। ঘামের সঙ্গে পানির পাশাপাশি লবণও বের হয়ে যায়। তরমুজের সোডিয়াম সে চাহিদা পূরণে সক্ষম। এ ছাড়াও তরমুজে আরও কিছু স্বাস্থ্য উপকারী গুণ বিদ্যমান।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: সম্প্রতি আমেরিকান জার্নাল অব হাইপারটেনশনে একটি প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ রক্তচাপ কমায়। এতে গবেষকরা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের তরমুজের উপাদানগুলো আলাদা করে সেবন করতে দেন। দেখা যায়, এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। এক কাপ তরমুজে ২৫০ মিলিগ্রাম সাইট্রুলিন থাকে। এ সাইট্রুলিন শরীরে আর্জেনিনে কনভার্ট হয়। আর আর্জেনিন হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: তরমুজে থাকা লাইকোপেন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সার হতে দেয় না। বিশেষ করে গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপেন পুরুষের প্রোস্টেট ক্যান্সারে বাধা দেয়।
কোষ্ঠ্য কাঠিন্য প্রতিরোধ: তরমুজে ফাইবার ও পানি থাকে। এ দুটোই কোষ্ঠ্য কাঠিন্য দূর করতে সহায়ক।
ত্বক ঠিক রাখে: তরমুজে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ ও পানি। এগুলো ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে। ত্বক রাখে তরতাজা। তরমুজ গরমে খেতে পারেন। তরমুজ কেনার সময় খেয়াল রাখুন, এটি যেন তরতাজা ও পাকা হয়। পাকা তরমুজের ওজন সাইজের তুলনায় বেশি হয়। তরমুজের যে অংশের সঙ্গে মাটির সংস্পর্শ থাকে, সে অংশ সাদা বা সবুজ হলে বোঝা যায়, তরমুজটি পাকা নয়। এ অংশ হলদেটে হলে তা পাকা। অনেক দিন রাখলে তা পচে যেতে পারে। তরমুজ খেলে হতে পারে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া। তাই তরতাজা দেখে তরমুজ খান। সমকাল।
লেখক: ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু (ঢামেক)