শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ: মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রথমবারের মতো ভারতে একটি প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে। বিতর্কিত জম্মু-কাশ্মীরে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির পর এই দাবি করলো আইএস।
আইএস নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আমাক নিউজ অ্যাজেন্সি শুক্রবার ‘উইলায়াহ অব হিন্দ’ নামের নতুন এই প্রদেশ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীরের সোফিয়ান জেলার আমশিপোরা এলাকায় সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কিছু সদস্য নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে আমাক।
এদিকে, শুক্রবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোফিয়ান জেলায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে এনকাউন্টারে ইশফাক আহমদ সফি নামের এক জঙ্গি নিহত হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে সিরিয়া এবং ইরাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কথিত খিলাফতের শেষ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ভারতে আইএসের নতুন প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবিকে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভূখণ্ড হারিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই জঙ্গিগোষ্ঠী এখন আত্মঘাতী হামলা ও গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের মাত্রা বাড়িয়েছে। গত মাসে ইস্টার সানডের দিনে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে তিনটি গীর্জা ও বিলাসবহুল তিনটি হোটেলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ২৫৩ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আইএস।
জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সংস্থা সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপের পরিচালক রিটা কার্টজে বলেছেন, এই অঞ্চলে যাদের বাস্তব শাসনব্যবস্থার অনুরূপ কিছুই নেই; সেখানে নিজেদের পতনের মুহূর্তে একটি প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি বেশ অস্পষ্ট।
ভারত শাসিত মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে স্থানীয় বিভিন্ন বিচ্ছিনতাবাদী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীগুলোর অধিকাংশই হয় স্বাধীনতা নতুবা পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীরকে একীভূত করার দাবি জানিয়ে আসছে।
কাশ্মীর ইস্যুতে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশি দুই দেশ ভারত-পাকিস্তান এখন পর্যন্দ দু’বার যুদ্ধে জড়িয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ভারতীয় কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে বোমা হামলায় অন্তত ৪০ জওয়ানের প্রাণহানি ঘটে।
এই হামলাকে ঘিরে দুই দেশের উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে; যা কাশ্মীর ইস্যুতে দেশ দুটিকে তৃতীয় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। আইএসের প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবির ব্যাপারে জানতে কাশ্মীরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ভারতীয় এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।