শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: দুবাইয়ের বিত্তশালী শাসক ও কবিতালেখক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল–মাকতুম এবং পালিয়ে যাওয়া ধনী স্ত্রী প্রিন্সেস হায়ার মধ্যে এ মাসের শেষের দিকে লন্ডনের আদালতে একটি শোডাউন হতে পারে। খবর ডন।
লন্ডনের পারিবারিক আদালত আল–মাকতুমের বিরুদ্ধে প্রিন্সেস হায়ার করা মামলাটি চলতি মাসের ৩০ তারিখে শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
প্রিন্সেস হায়া ১১ বছর বয়সী রাজকন্যা জলিলা, সাত বছরের জায়েদকে নিয়ে পালিয়েছেন। তার সঙ্গে আনা দুই সন্তানের হেফাজত নিয়েই শুনানির বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ব্রিটেনে রয়েছেন। কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনসের সাড়ে আট কোটি ডলারের বাড়িতে তিনি থাকেন। এ ছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়িগুলোর একটি তিনি ব্যবহার করছেন।
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সৎ বোন শেখ হায়া দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৪৫ বছর বয়সী এ রাজকন্যা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে ছিলেন। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির শুভেচ্ছা দূত হিসেবেও কাজ করেন তিনি।
২০০৪ সালে শেখ মোহাম্মদকে বিয়ে করেন শেখ হায়া। তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বলছে, শৈশব থেকে খেলাধুলা তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে।
বিভিন্ন মানবিক কাজে অংশগ্রহণ করা ছাড়াও রয়াল উইন্ডসোর হোরস সোর সহসভাপতি তিনি। ইমেরিটাস উমেনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হায়া বলেন, আমি সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম। দৈনিক পত্রিকা ও সাময়িকীর প্রতি আমার আলাদা অনুরাগ আছে।
সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারের জন্য প্রিন্সেস হায়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে প্রিন্সেসের এক প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হায়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ছাড়া হায়ার বসবাসের বিষয়টি নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেননি।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ মোহাম্মদ ও প্রিন্সেস হায়ার বিষয়টি বৃহৎ দুই পরিবারে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে।
গত বছর শেখ মোহাম্মদের মেয়ে শেখ লতিফার দুবাই থেকে পালিয়ে আবার রহস্যজনক ফিরে এসেছেন। শেখ লতিফা এক ফরাসি নাগরিকের সহায়তায় সাগরপথে পালিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় উপকূলে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের বাধা দেয় এবং পরে দুবাইয়ে ফিরিয়ে দেয়। ৪০ মিনিটের এক ভিডিওতে শেখ লতিফা বলেন, তার বাবা কয়েক বছর ধরে তাকে কারারুদ্ধ করে রেখেছিলেন এবং সেখানে তিনি নির্যাতিত হচ্ছিলেন।
এদিকে দুবাই কর্তৃপক্ষ বলছে, শেখ লতিফা এখন দুবাইতে নিরাপদে আছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অপহরণ করা হয়েছে।
সৎকন্যা শেখ লতিফার ভাগ্যে যে হতাশাজনক ঘটনা ঘটেছে, তাতে উদ্বেগজনকভাবে সতর্ক ছিলেন শেখ হায়া।
এ ঘটনায় নিজের স্বামীকে সমর্থন করে গেছেন ৪৫ বছর বয়সী রাজকুমারী হায়া। কিন্তু নতুন কিছু ঘটনা জানার পর তিনি সন্দেহজনক হয়ে ওঠেন। এ ছাড়া তার স্বামীর বড় পরিবারের কাছ থেকে ব্যাপক চাপ ও বৈরিতার মুখোমুখি হন শেখ হায়া।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ আল মাকতুম মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী একজন নেতা। এ ছাড়া তিনি কবিতা ভালো লেখেন। পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর ঐতিহ্য নিয়ে এবং প্রিন্সেস হায়ার পালিয়ে যাওয়া নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন।
গত সপ্তাহে ইনস্টাগ্রামে শেখ মোহাম্মদ প্রিন্সেস হায়াকে উদ্দেশ করে একটি কবিতা পোস্ট করেন, এর শিরোনাম তুমি জীবিত, তুমি মৃত্যু।
৬৯ বছর বয়সী দুবাই শাসকের ষষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া। তার ১১ মেয়ে ও সাত ছেলে রয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও প্রিন্সেস হায়ার পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে দুবাই কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।