শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৭

পোশাক শিল্পে ব্যাপক অস্থিরতার আশঙ্কা নভেম্বরে

পোশাক শিল্পে ব্যাপক অস্থিরতার আশঙ্কা নভেম্বরে

শীর্ষবিন্দু নিউজ: চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে পোশাক শিল্প ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এ কারণে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে প্রায় এক বছর ধরে কোনো না কোনো কারণে অস্থির থাকছে পোশাকখাতের পরিবেশ। দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনা যেন পিছু ছাড়ছে না পোশাক শিল্পকে। এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক ও ঈদ-উল আজহার আগে আসওয়াদ টেক্সটাইলের অগ্নিকাণ্ডে মারা যান আরো সাত শ্রমিক।

চলতি বছরের ৬ জুন পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণে সরকার নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে। অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ কে রায়কে চেয়ারম্যান করে আট সদস্য বিশিষ্ট এই মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডে একজন নিরপেক্ষ সদস্য, পোশাক কারখানার মালিক ও শ্রমিক পক্ষের দুজন স্থায়ী সদস্য এবং পোশাক কারখানা মালিক পক্ষের দুজন প্রতিনিধি রয়েছেন।

মজুরি বোর্ডে নিরপেক্ষ সদস্য হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  মো. কামাল উদ্দীন, মালিক পক্ষের স্থায়ী সদস্য হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের শ্রম উপদেষ্টা কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের স্থায়ী সদস্য হিসেবে রয়েছেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু। এছাড়াও পোশাক কারখানা মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন আরশাদ জামাল দিপু ও সিরাজুল ইসলাম রনি।

এদিকে রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির পর পরই শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু, বিপত্তি বাধে ন্যূনতম মজুরির পরিমাণ নিয়ে। কারণ, শ্রমিক পক্ষ থেকে ন্যূনতম মজুরি দাবি করা হয় আট হাজার একশ ১৪ টাকা। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মালিক পক্ষের ন্যূনতম মজুরি তিন হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাবনাকে ‘তামাশা’ বলে উল্লেখ করে রাস্তায় নেমে আসেন শ্রমিকরা। শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সহিংসতায় ক্ষতি হয় প্রায় হাজার কোটি টাকা।

পরে নভেম্বরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি যৌক্তিক পরিমাণ নির্ধারণ করার প্রতিশ্রুতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিন্তু, নভেম্বরের মধ্যে এই মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার আশঙ্কা বা নির্ধারণ হলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলগুলোতে। আর এর ফলে এ খাতের শ্রমিকরা ফের রাস্তায় নামে আসতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন শ্রমিক নেতারা।

সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে এখনই মনোযোগ দেওয়া উচিত।   বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সমিতি বিজিএমইএ’র পরিচালক ও মুজরি বোর্ডে মালিক পক্ষের সদস্য আরশাদ জামান দিপু বার বারই বলছেন, শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি যে আট হাজার টাকার দাবি করছেন, তা মেনে নিলে অনেক কারখানাই তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই উদ্যোক্তাদের কথাও মাথায় রাখতে হবে।

শ্রমিক সংগঠনগুলোর সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকরা আগেও ন্যূনতম মজুরির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন, এখন ঈদের পর আবার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে মালিক পক্ষ থেকে যে ধরনের প্রস্তুতিই নেওয়া হোক না কেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। তবে এ বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে মজুরি নির্ধারণের বিষয়টিতেও রাজি শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী নেতারা। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন থেকে জানা যায়, গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঈদ-উল আজহার ছুটি শেষ করে ২১ অক্টোবর থেকে পর্যায়ক্রমে পূর্ব নির্দেশ অনুযায়ী নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দেবেন।

 




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024