নারীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল মেন্সট্রুয়েশন সাইকেল বা পিরিয়ড। এই সময়ে মেয়েদের অনেক ধরনের লক্ষণ দেখা যায়।
যেমন– তলপেটের অতিরিক্ত ব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, মাথা ঘুরানো, এসিডিটি, মুখের অরুচি, বমি বমি ভাব, অসস্তিবোধ ইত্যাদি ধরনের লক্ষণ দেখা যায়।
অনেকের আবার নিয়মিত পিরিয়ড হয় না। অনিয়মিত পিরিয়ড বা একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (POS) এর জন্য হয়ে থাকে।
তবে আরও অনেক কারণ আছে যার জন্য পিরিয়ড নিয়মিত হয় না। যেমন– অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহণ যেমন অতিরিক্ত কফি পান করা, স্ট্রেস নেওয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, অপরিচ্ছন্ন থাকা, মদ্যপান বা ধূমপান করা ইত্যাদি।
পিরিয়ডের সময় এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত যা গ্রহণে শরীর সম্পূর্ণভাবে সুস্থ ও সতেজ থাকবে। নিয়মিত পিরিয়ড হলে শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
যেসব খাবার মেন্সট্রুয়েশন সাইকেলের জন্য উপযোগী তা হল–
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ ও ঠাণ্ডা করে এবং মেজাজ ঠাণ্ডা করে তাই এটি পিরিয়ডের সময় খাওয়া ভালো।
গ্রিন টি: গ্রিন টি এক প্রকারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি পিরিয়ডের ব্যথাও কমায়।
লেবু: লেবুতে ভিটামিন সি আছে। লেবুর শরবত বা তরকারিতে লেবু দিয়ে খাবার পিরিয়ডের সময় খাওয়া স্বাস্থের জন্য ভালো।
কলা: কলাতে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি আছে, যা খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে এনার্জি আসে। শরীরের রক্তক্ষরণের জন্য শরীর কয়েকদিন দুর্বল থাকে। তাই এই সময়ে কলা একটি ভালো পুষ্টিকর খাবার৷
আদা ও দারুচিনি চা: দুধ চায়ের বদলে আদা ও দারুচিনি দিয়ে চা খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়।
আনারস: অনিয়মিত পিরিয়ড হলে আনারস খেলে আশা করি পিরিয়ড নিয়মিত হবে।
চিটাগুড়: চিটাগুড় লাল চা বা মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হবে এবং দেহে লৌহ ও জিংকের পরিমাণ পরিমিত থাকে।
কাচা পেপে: কাচা পেপে নিয়মিত পিরিয়ড হওয়াতে সাহায্য করে এবং পিরিয়ডের ফ্লো ভালো হয়।
হলুদ গুঁড়া: পিরিয়ডের সময় হলুদ খাওয়া ভাল। এটি পাতলা দুধের সঙ্গে পান করতে হয়।
পেপে: পেপের শরবত পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর সঙ্গে ফ্লো ক্লিয়ার হওয়াতে সাহায্য করে।
ধনেপাতা: ধনেপাতা বা পার্সলিপাতা ভর্তা অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত হওয়াতে সাহায্য করে।
অন্যান্য খাবারের মধ্যে বাদাম, কাঠবাদাম, রঙিন ও সবুজ শাক–সবজি, আনার, অ্যালোভেরা, গাজর ইত্যাদি খাবার পিরিয়ডের সময় গুরুত্বপূর্ণ।
পিরিয়ডের সময় এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো এড়িয়ে চলতে হয়। যেমন– কফি বা দুধ চা এড়িয়ে চলতে হবে, অতিরিক্ত ভারী খাবার ও তেলে ভাজাপোড়া খাবার, প্রসেসড খাবার, কোল্ড ড্রিংকস ও অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত ঘন দুধ জাতীয় খাবার।
এভাবে খাবারের দিকে নিয়ম মেনে চললে মেন্সট্রুয়েশন সাইকেল নিয়মিত হবে এবং এই সময়ে শরীর এনার্জিটিক ও সুস্থ থাকবে।
লেখক: রুবাইয়া পারভীন রীতি, পুষ্টিবিদ, কোদোমো বেবি কেয়ার প্রোডাক্ট বাংলাদেশ৷