শীর্ষবিন্দু নিউজ: যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির একক নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর এবার প্রধান টার্গেট ব্রেক্সিট।
কনজারভেটিভ পার্টির এই ঐতিহাসিক জয়ের পর আগামী মাসের মধ্যে ব্রেক্সিট সম্পন্ন এবং ভোটারদের আস্থার প্রতিদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
২০১৬ সালে এক গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দেন যুক্তরাজ্যের ভোটাররা। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে কয়েক দফায় তৈরি হয় ব্রেক্সিট চুক্তি।
তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এসব চুক্তি অনুমোদন করেনি। এজন্য পার্লামেন্টে দলের আসন বাড়াতে ১২ ডিসেম্বর আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আরি এই ভোটে জিতে সমর্থকদের সামনে জনসন বলেন, যারা ব্রেক্সিটের জন্য ভোট দিয়েছেন, আমি তাদের হতাশ করবো না। কোনও যদি বা কিন্তু নয়। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ব্রেক্সিট হচ্ছেই। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এমন ঘোষণা দেন তিনি।
ব্রিটেনের মোট ৬৫০টি আসনের আইনপ্রণেতা নির্বাচন করতে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোট দিয়েছে ভোটাররা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে প্রয়োজন পড়ে ৩২৬টি আসন। সেখানে কেবল কনজারভেটিভরাই পেয়েছে ৩৬৫টি আসন। আর লেবার ২০৩, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ৪৮, লিবারেল ডেমোক্রেটরা ১১ এবং আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) জয়লাভ করেছে ৮টি আসনে।
শুক্রবার বরিস জনসন বলেছেন, তিনি আশা করছেন তার পার্টি ‘ঐতিহাসিক’ জয় পাওয়ায় ব্রেক্সিট বিতর্কের অবসান হবে। টোরিদের এ অসামান্য জয়ে ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে দীর্ঘদিন ধরে যে অচলাবস্থা চলছিল, তা নিরসনের প্রবল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রিটেনের যে এলাকাগুলো লেবার পার্টির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেখানেও এবার ভাল ভোট পেয়েছে কনজারভেটিভরা। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ব্রেক্সিটের প্রতিশ্রুতি দিয়েই লেবার পার্টির ভোটের একাংশ নিজের দিকে নিয়ে এসেছেন বরিস জনসন। লেবার পার্টির যে সমর্থকরা এবার কনজারভেটিভদের ভোট দিয়েছেন, তাদের উদ্দেশে বরিস জনসন বলেন, ‘যারা কাঁপা কাঁপা হাতে ব্যালট পেপারে ছাপ দিয়েছেন, তাদের হতাশ করবো না। তাদের আস্থার প্রতিবাদ দেবো।’
জনসন বলেন, আপনারা হয়তো আপনাদের ভোট আমাদের ধার দিয়েছেন। আপনারা কখনওই কনজারভেটিভ দলের প্রকৃত সমর্থক নন। পরের বার হয়তো আবারও লেবার পার্টিকেই ভোট দেবেন। তবে একবারের জন্য আপনারা যে আমাদের ওপরে আস্থা রেখেছেন, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ব্রেক্সিট নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানাননি। সেজন্য হয়তো লেবার পার্টির ঘাঁটি রেড ওয়াল নামে পরিচিত সেন্ট্রাল ও নর্দার্ন ইংল্যান্ডেও অনেকে এবার কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দিয়েছেন।
বরিস জনসন বলেছেন, আমরা এমন মানুষজনেরও আস্থা অর্জন করেছি যারা আগে কখনও আমাদের ভোট দেননি। যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তারা পরিবর্তন চান। সেজন্য আমাদের প্রথম কাজ হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা।