শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৫

মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে কয়েক বছরের মধ্যেই

মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে কয়েক বছরের মধ্যেই

শীর্ষবিন্দু আর্ন্তজাতিক নিউজ: কয়েক বছর ধরে মানুষের মাথা প্রতিস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। বছর দুই আগে ইতালীয় এক নিউরোসার্জন দাবি করছিলেন তার নেতৃত্বে চিকিৎসক দল প্রথমবার সফল ভাবে মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য নিঃসন্দেহে তা চাঞ্চল্যকর। আদৌ জীবিত মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন সম্ভব কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ডেইলি মেইল ডট কম ডট ইউকে

বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশই মনে করেন, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়। কিন্তু, যুক্তরাজ্যের ‘হাল ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতাল’-এর নিউরোসার্জন ব্রুস ম্যাথু এবার দাবি করলেন, মাথা প্রতিস্থাপন অসম্ভব নয়।

ব্রুস ম্যাথু আশাবাদী, সামনের ১০ বছরের মধ্যেই দুই ভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে মাথা প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। তবে, এখন যে ভাবে স্পাইনাল কর্ড বা সুষুম্নাকাণ্ড থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে, প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চলছে, তা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি।

তার মতে, সুষুম্না কাণ্ডসহ মাথা প্রতিস্থাপন করতে হবে। তিনি আশাবাদী, অত্যাধুনিক স্টেমসেল প্রতিস্থাপন, রোবোটিক ও স্নায়ু সার্জারির সৌজন্যেই এই সাফল্য মিলবে।

এর আগে জীবিত মানুষের ক্ষেত্রে না হোক, বানারের মাথা প্রতিস্থাপনের চেষ্টা হয়েছে দু’বার । ২০১৬ সালে ক্যাপলান একটি জীবিত বানরের মাথা প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচার করেন। তখন বলা হয়েছিলো, বানরটির স্নায়ুতন্ত্রের কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু, অস্ত্রোপচারের ২০ ঘণ্টা পরেই বানরটি মারা যায়।

ক্যাপলানের আগে হেড ট্রান্সপ্লান্টের অগ্রদূত রবার্ট হোয়াইট ১৯৭০ সালে একটি বানরের মাথা প্রতিস্থাপন করেছিলেন। বানরটি মোটে ৯দিন বেঁচে ছিলো। শরীরটি প্রতিস্থাপন করা মাথাকে রিজেক্ট করার কারণেই সে মারা যায়।

কানাভেরোর দাবি নিয়ে তখনই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। কেন তাঁরা এটি অসম্ভব বলে মনে করছেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় এক শরীর থেকে মাথা আলাদা করে অন্য শরীরে প্রতিস্থাপন করা পর্যন্ত সেটিকে জীবিত রাখতে হবে। জীবিত মানুষের শরীরে তা সম্ভব নয় বলেই তাঁরা মনে করেন।

আমেরিকার নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োএথিকসের শিক্ষক আর্থার ক্যাপলান জানান, ক্যানাভারোর এই কাজ ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়। সফল ভাবে মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন সম্ভব নয় বলেই তিনি মনে করেন। একজন মানুষের থেকে আর একজন মানুষের শুধুমাত্র চেহারাটুকু প্রতিস্থাপন করাটাও প্রচণ্ড কঠিন বলে তিনি মনে করেন।

কারণ, অনেক বড় বড় ডোজে ইমিউনোসাপ্রেসেন্ট ব্যবহার করতে হয়, যাতে মানুষের শরীর এই ট্রান্সপ্লান্টকে নষ্ট না করে দেয়। মাথা প্রতিস্থাপন করতে গেলে আরও বড় ডোজ দরকার হবে। যদি তাই করা হয়, তার পরেও কয়েক বছরের মাধ্যে রিজেকশন বা ইনফেকশনের মাধ্যমে মারা যাবেন ওই ব্যক্তি।

এটাও হতে পারে যে, মাথা এবং শরীর আলাদা মানুষের হওয়ায়, প্রতিস্থাপনের পর সেই মানুষটি কখনোই আর পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে পাবেন না। ক্যাপলেন কথায়, ‘নতুন সকেটে একটা লাইট বাল্ব ঢুকিয়ে দেয়ার মতো সহজ কাজ নয় এটি।’ ‘আপনি যদি মাথা ও মস্তিষ্ক সরিয়ে ফেলেন, সে থাকবে নতুন একটা রাসায়নিক পরিবেশে আর নিউরোলজিক্যাল ইনপুটগুলোও নতুন হবে। মৃত্যুর আগে পাগল হয়ে যাবে সেই মানুষটি।’

শুধু তাই নয়, প্রতিস্থাপন সফল করতে হলে, প্রচুর স্নায়ু এবং রক্তনালী জুড়তে হবে। মেরুদণ্ড এবং সুষুম্নাকাণ্ডও জোড়া দিতে হবে। ক্যানাভারোর অবশ্য দাবি, তাঁরা মেরুদণ্ড, স্নায়ু এবং রক্তনালী জোড়া দেয়ার উপায় বের করেছেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024