শীর্ষবিন্দু নিউজ: দেশে প্রথম বারের মতো মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম চালু হয়েছে সিলেটে। ইতোমধ্যে শহরের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকার সড়কের ওপরে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে সংযোগ চালু করা হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে নগরে তারের জঞ্জাল কমাতে টেলিফোন, ইন্টারনেট, ক্যাবল লাইনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সব তার ভূগর্ভে নেওয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (বিউবো) সিলেটের প্রকল্প পরিচালক কেএম নাজিম উদ্দিন।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সূত্র জানায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রায় ১৫ দিন পরীক্ষামূলক সরবরাহ পর্যবেক্ষণের পর গত রবিবার (৫ জানুয়ারি) থেকে শাহজালাল মাজারের প্রধান সড়ক থেকে মাজারের প্রধান ফটক পর্যন্ত সড়কের ভূগর্ভস্থ লাইনে পূর্ণ সরবরাহ চালু করা হয়। বৈদ্যুতিক তারসহ সেবামূলক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তারের জঞ্জাল কমাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে এবং সিসিকের নির্দেশনায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে রয়েছে সিলেট। এ কারণেই কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সিলেটে একটি ইতিহাস রচিত হলো।
সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট বিভাগ শীর্ষক দুই হাজার ৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এই প্রকল্পের আওতায় সিলেট নগরে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ৬ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে।
বিউবোর সিলেটের প্রকল্প পরিচালক বলেন, ভূগর্ভের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন নেওয়ার জন্য সড়ক কাটাকাটির ফলে সিলেট নগরের বাসিন্দাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। বহির্বিশ্বের মতো উন্নত জীবনযাপনের জন্য পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের এই প্রথম হযরত শাহজালাল মাজার এলাকায় সড়কের উপর থেকে সব ধরনের খুঁটি সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে এই কার্যক্রমটি সিলেটের পরপরই হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জের কিছু এলাকায় শুরু হবে। সব ধরনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। আশা করছি, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সিলেটের কাজ শেষ হবে। সিলেট বিভাগে সফলভাবে সম্পন্ন হলে এর ধারাবাহিকতায় দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনেও এ কাজ শুরু হবে।
তিনি জানান, সিলেটে এ প্রকল্পের আওতায় আম্বরখানা উপকেন্দ্র থেকে চৌহাট্টা হয়ে বন্দরবাজার পর্যন্ত দুটি এবং শেখঘাট উপকেন্দ্র থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত আরও একটি ১১ কেভি ফিডারকে সম্পূর্ণভাবে ভূগর্ভস্থ লাইনে রূপান্তর করার কাজ চলছে। সিলেটে বর্তমানে মাটির নিচে বিদ্যুতের লাইন নেওয়ার জন্য চলা কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের লাইন মাটির নিচে নেওয়ার জন্য পরে কাজ করবে সিটি করপোরেশন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, উন্নত দেশের মতো এই প্রথম সিলেটে মাটির নিচ দিয়ে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এখন রাস্তার ওপর কোনও খুঁটি নেই। এ কারণে বেড়েছে এই এলাকার সৌন্দর্য। সিসিকের ১নং ওয়ার্ডের আওতাধীন হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারকে কেন্দ্র করে এই কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সিলেটকে বাংলাদেশের মধ্যে একটি অত্যাধুনিক ও সুন্দর নগর হিসেবে গড়তে যা করার প্রয়োজন তাই করা হবে। এজন্য তিনি নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।